ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেকে কুকুর আতঙ্ক, সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
ঢামেকে কুকুর আতঙ্ক, সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি ঢামেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করে বেওয়ারিস কুকুর

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) চত্বরসহ হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনে বেওয়ারিস কুকুরের আনাগোনা অনেক বেড়েছে। হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করা কুকুরগুলোকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

তাই ঢামেক কর্তৃপক্ষ এসব কুকুর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি দিয়েছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুরাতন ভবন  ও নতুন ভবনের নিচতলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কুকুরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় এবং কুকুরগুলো সেখানেই নিয়মিত অবস্থান করে বলে জানা যায়। পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে আরও অনেক বেওয়ারিস কুকুরের দেখা মেলে নিয়মিত।

হাসপাতালের একজন সিনিয়র স্টাফ জানান, পুরাতন ভবনের নিচতলায় সারিবদ্ধভাবে অনেক ওয়ার্ড আছে। যেখানে রোগীরা ভর্তি থাকেন। নিয়ম অনুযায়ী রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডের ভেতরে থাকতে না পেরে রাতে ওয়ার্ডের সামনে তাদের সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে থাকেন। সেসব জায়গায় পাশাপাশি কুকুরগুলো ১০৫ নম্বর অস্ত্রোপচার কক্ষের সামনে দিব্যি দলবদ্ধভাবে ঘোরাঘুরি করে। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, হাসপাতালের ভেতরে স্বজনদের সঙ্গে আগত শিশুরা সেসব কুকুরকে দেখে ভয়ে চিৎকার করে।

তিনি বলেন, যদিও বা এখন পর্যন্ত হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করা এসব বেওয়ারিস কুকুর কাউকে কামড়িয়েছে বলে শোনা যায়নি। কিন্তু যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।

আরেক স্টাফ জানান, হাসপাতালে অবস্থান করা কুকুরগুলো নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। কুকুরগুলোকে হাসপাতাল থেকে বের করে দিলেও আবার তারা বিভিন্ন গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে ও বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। আবার কোনো কোনো কুকুর পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ি অথবা ঢালসিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যায়। একদিন দেখা যায় দ্বিতীয় তলায় লেবার ওয়ার্ড ও নিউবর্ন ওয়ার্ডের সামনে একটি কুকুর বসে আছে। সেখান থেকে তাকে দ্রুত তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করা এসব কুকুর এখনবধি কোনো মানুষকে কামড় দেয়নি কিন্তু যেকোনো সময় চিকিৎসক, নার্স, রোগী ও স্বজনরা আক্রান্ত হতে পারেন।

তিনি বলেন, আনুমানিক দেড় মাস আগে যাত্রাবাড়ী অথবা কদমতলী এলাকা থেকে এক শিশুকে তিন কুকুর একসাথে কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। সেই কুকুরগুলো আহত শিশুটির বাসার আশপাশেই অবস্থান করত মানে এলাকার পোষা। অথচ সেই পোষা কুকুরগুলোই ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে একসাথে কামড়ায় পরে হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসা নেয়। এরকম ঘটনা যদি হাসপাতালেও যদি ঘটে যায় তখন কী হবে! সেই শঙ্কায় ভুগছি।

দিনে ও রাতে সরেজমিন ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, কুকুরগুলো ঢামেকের পুরাতন ভবনের ওয়ার্ডের সামনে ঘোরাঘুরি করছে। এছাড়া আরো কয়েকটি কুকুর নতুন ভবনের নিচতলায় চিকিৎসক, রোগী ও স্টাফদের লিফটের সামনে সব সময় অবস্থান করে থাকে।

এই ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমিও যখন হাসপাতালে রাউন্ডে বের হই তখন মাঝে মাঝে কুকুরগুলোকে হাসপাতালের ভেতর দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে তখন আবার তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই কুকুরগুলো আবারও হাসপাতালের বিভিন্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করে। কারণ হাসপাতালের ভেতরে অনেকে তাদের খাবার দিয়ে থাকেন। তবুও হাসপাতালের ভেতরে দলবদ্ধভাবে কুকুর প্রবেশ করা ভালো বিষয় নয়। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কুকুরকে তো আর পিটিয়ে মারা যাবে না। এই ব্যাপারেও আইন আছে। তাই আমরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি দিয়েছি। যেন তারা কুকুরগুলো ধরে অন্তত বহুদূরে ছেড়ে দিয়ে আসতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
এজেডএস/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।