ঢাকা, সোমবার, ৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৬ রমজান ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৫ আগস্টের আগে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার সুযোগ ছিল না: বিএমইউ ভিসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
৫ আগস্টের আগে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার সুযোগ ছিল না: বিএমইউ ভিসি

ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছিলেন ৫ আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পূর্বে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের প্রাপ্য সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সুযোগ ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।

সোমবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে ‘মেডিকেল রেসপন্স অব বিএসএমএমইউ টু দ্য জুলাই আপরাইজিং: সার্জিক্যাল অ্যান্ড অর্থোপেডিক পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক শাহিনুল আলম বলেন, পেশাগত ও প্রতিষ্ঠানগত দায়বদ্ধতা থেকে আজকের এ সেমিনারের আয়োজন। এ সেমিনারের আয়োজন সময়ের দাবি, জাতীয় দাবি এবং আন্তর্জাতিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আহতদের নিয়ে ডকুমেন্টেশন সংরক্ষণ বা দালিলিক প্রমাণ হিসেবে এ সেমিনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার দুয়ার খুলে যায় এবং বিএমইউয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। শুরুতে অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ, জেনারেল সার্জারি বিভাগ, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ আহতদের চিকিৎসায় বিরাট অবদান রাখে। পরবর্তীতে মনোরোগবিদ্যা বিভাগ এবং বর্তমানে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ আহতদের চিকিৎসা ও পুনবার্সনে কাজ করে যাচ্ছে। বিএমইউয়ের বর্তমান প্রশাসন আহতদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি তাদের পুনবার্সনেও সহায়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।   

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় বিএমইউ অনন্য সাধারণ অবদান রেখেছে। সার্জিক্যাল ও অর্থোপেডিক সংক্রান্ত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আহতদের পুনরুদ্ধারে বিরাট অবদান রেখেছে। এর ফলে অনেক আহত রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং অনেকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে শুরু করেছে।

সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছার সভাপতিত্বে ও ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।

সেন্ট্রাল সেমিনারে অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের হ্যান্ড সার্জন ডিভিশনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুল ইসলাম এবং জেনারেল সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ফারুক ইশতিয়াক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের হ্যান্ড সার্জন ডিভিশনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ হতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ২০০ এরও বেশি রোগীকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসায় দেওয়া হয়। তার মধ্যে ৬৫ জন রোগীকে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যার মধ্যে বুলেট ইনজুরি ২৬, পিলেট ইনজুরি ২১, শারীরিক আঘাত ১৬, মেরুদণ্ডের ব্যথা ১৫, ওপর থেকে পড়ে আঘাত পাওয়া দুইজন রোগী রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিটে ৩৯টি মেজর অপারেশন করা হয়।

তিনি জানান, শরীরের বিভিন্ন অংশে পিলেট পাওয়া যায়, যেগুলো বেশি ব্যথার কারণ সেগুলো অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয়। বেশিরভাগ অপারেশন নার্ভ ইনজুরির এবং নার্ভ ইনজুরির বিভিন্ন ধরনের নার্ভ সার্জারি করা হয়। যেমন নার্ভ রিপেয়ার, গ্রাফটিং, নিউরোলাইসিস, নার্ভ ট্রান্সফার ও টেনডন ট্রান্সফার অন্যতম। ১৩ জন রোগীর বিভিন্ন ধরনের ভাঙা হাড়ের অপারেশন করা হয় এবং এছাড়াও কিছু অপারেশন ছাড়াও চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাঁটুর বুলেট আথ্রোসকপির মাধ্যমে বের করা হয়। মেরুদণ্ডের আঘাত পাওয়া রোগীদের কনজারভেটিভ চিকিৎসা দেওয়া হয়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া রোগীদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে সুচিকিৎসা দেওয়া হয়। বেশিরভাগ রোগীর চিকিৎসায় ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলেটেশন বিভাগের সহায়তা নেওয়া হয়। এসব রোগীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।