রাজশাহী: দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে রাজশাহীর মোশাররফ হোসেন চৌধুরী লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলেও এখন নিজেই অন্ধ হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর কেটে গেলেও উন্নতমানের চক্ষু সেবা এবং আলোর জ্যোতি ছড়িয়ে দেওয়ার পরিবর্তে হাসপাতালটি এখন জর্জরিত নানা সঙ্কটে।
১৯৯৯ সালের ৫ জুন মোশাররফ হোসেন চৌধুরী লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের পবা উপজেলা চত্বর ইউসেপ বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত হাসপাতালটির মূল ভবন ১ বিঘা জমির ওপর স্থাপন হলেও এর মোট জমির পরিমাণ ছয় বিঘা।
মোশাররফ হোসেন চৌধুরী নামের এক দানশীল ব্যক্তি এ হাসপাতালের জন্য জমি দান করেন। হাসপাতালের নামকরণ হয় তার নামেই।
কিন্তু অবকাঠামো, চক্ষু চিকিৎসক না থাকা, জনবল সঙ্কট ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে শুরু থেকেই চক্ষু হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পরে। লায়ন্স ক্লাব সহ সরকারও প্রয়োজনীয় সুদৃষ্টি না দেওয়ায় স্থাপনা থাকা সত্ত্বেও চক্ষু সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে মোশাররফ হোসেন চক্ষু হাসপাতাল।
বর্তমানে একজন পাহারাদার হাসপাতাল ভবন এবং জমির দেখভালের দায়িত্বে আছেন। তবে হাসপাতালটি চালু হওয়ার প্রথম বছরে পুরোদমে রোগী দেখাসহ আউটডোরের সব কার্যক্রম বজায় ছিলো। তখন রোগীর সংখ্যাও বেশি ছিলো। কিন্তু এখন একেবারেই শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম।
মোশাররফ হোসেন চৌধুরী লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে লায়ন্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, “সেবার মানসিকতা নিয়ে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। পবার ভুগরইল নওদাপাড়ায় মোশাররফ হোসেন চৌধুরী চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠারও উদ্দেশ্য সেটাই। তবে চিকিৎসক সংকট এবং অপারেটিভ অণুবীক্ষণযন্ত্র না থাকার কারণে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ”
তিনি জানান, চোখের কোনো অপারেশন করতে হলে অবশ্যই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের প্রয়োজন। অথচ এখানে নিজস্ব কোনো জেনারেটরের ব্যবস্থা নেই। তাই অপারেশনের কথা ভাবাই যায়না। তবে হাসপাতালটি খুব শিগগিরই পুরোদমে চালু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে লায়ন্স ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এখানে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছাড়াও প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক এবং অন্যান্য ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের জন্য সরকার এবং রাজশাহীর সহৃদয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৩
এসএস/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর/আরআই