ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হার্টের ঝুঁকি কমাতে ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৩
হার্টের ঝুঁকি কমাতে ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা: হার্ট ও স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বিভাগ (এফডিএ) ‘ট্রান্স ফ্যাট’ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে।

এফডিএ বলছে, কৃত্রিমভাবে তৈরি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তেলজাতীয় ক্ষতিকর এ দ্রব্য নিষিদ্ধ হচ্ছে।

এটা নিষিদ্ধ করা গেলে বছরে অনন্ত ২০ হাজার হার্ট অ্যাটার্ক ও ৭ হাজার মৃত্যু এড়ানো যাবে। এফডিএ দু’মাসের একটি পরিকল্পনাকালীন সময় হাতে নিয়েছে, যেটা ট্রান্স ফ্যাট ব্যবহার ক্রমে কমাতে সাহায্য করবে।

ট্রান্স ফ্যাট এক প্রকার হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় হাউড্রোজেন গ্যাস থেকে রূপান্তরিত তেল হাইড্রোজেনেটেড অয়েল নামে পরিচিত। এটা আবার প্রাথমিক চর্বির উৎস যা, রক্তের কোলস্টোরেল বাড়িয়ে দেয়।

‘ট্রান্স ফ্যাট’ ট্রান্স আইসোমার ফ্যাটি অ্যাসিড হিসেবেও পরিচিত, যা প্রকৃতিতে বিরল কিন্তু সহজেই তৈরি করা যায়।

গত দুই বছর ধরে ট্রান্স ফ্যাটের ক্ষতির দিকটা অস্বীকার করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সম্প্রতি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে নিজের উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন এফডিএ কর্মকর্তা মার্গারেট হ্যামবার্গ।

মার্কিন সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছন জনস্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা।

ট্রান্স ফ্যাট হার্টের যেকোনো রোগের জন্য একটি স্বতন্ত্র শক্তিশালী উপাদান। ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধের পদক্ষেপ মানুষকে মৃত্যুর দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া অনেকটা কমাবে বলে মন্তব্য করেছেন একটি দাতব্য বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

এফডিএর এ প্রস্তাব ট্রান্স ফ্যাট বন্ধে প্রথম কোনো উদ্যোগ নয়। নিউইয়র্কে ম্যাকডোনাল্ডসহ বড় বড় রেস্টুরেন্ট এবং চেইনশপে তাদের ফ্রাইড খাবারে ট্রান্স ফ্যাট ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কিছু ইউরোপীয় দেশও পদক্ষেপ নিচ্ছে।

ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে এমন অনেক খাবার ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।   কিছু প্রক্রিয়াজত পণ্য যেমন, কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পাই, হিমায়িত পিজ্জা, পপকর্ন, কফি ক্রামারস, প্রভৃতি প্রস্তুতে ট্রান্স ফ্যাট ব্যবহার করা হয়।

কৃত্রিম এই চর্বি প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং রেস্টুরেন্টে খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ানোর জন্যও ব্যবহার হয়।
পুষ্টিবিদরা এর সমালোচনা করে বলেন, পরিপূর্ণ চবি গ্রহণ করার চেয়ে হার্টের রোগে এই তেল বেশি ক্ষতিকর।
কিছু  কোম্পানি ২০০৬ সালে ট্রান্স ফ্যাটকে নতুন মোড়কে এর পুষ্টিগুণ দেখিয়ে খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু নিউইয়র্কসহ কিছু স্থানীয় প্রশাসন এটি নিষিদ্ধ করে। কিন্তু কিছু রেস্টুরেন্ট অবিরতভাবে এটি মাইক্রোওযেভ পপকর্ন, হিমায়িত পিজ্জা এবং বিভিন্ন ফ্রাইয়ের কাজে ব্যবহার করছে।

এফডিএর তথ্যানুযায়ী, আমেরিকানদের ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ ২০০৩ সালে ছিল গড়ে প্রতিদিন ৪.৬ গ্রাম, যা ২০১২ সালে এসে কমে দাঁড়ায় ১ গ্রামে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশেন বলছে, এফডিএর এই উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা হার্টের রোগ কমাবে।

নিউইয়র্কের বিদায়ী মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ, যিনি ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধের প্রধান উদ্যোক্তা তিনি এফডিএ এই পদক্ষেপকে ‘বড় অবদান’ বলে দাবি করেছেন।   জনস্বাস্থ্যের জন্য যুগান্তকারী এই পদক্ষেপের জন্য নিউইয়র্ক মডেল হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৩
এএ/এসএফআই/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।