ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জলাতঙ্কের চিকিৎসা নেই, প্রতিরোধই মুক্তির উপায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৪
জলাতঙ্কের চিকিৎসা নেই, প্রতিরোধই মুক্তির উপায় ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেছেন, জলাতঙ্ক একটি ভাইরাসজনিত প্রাণঘাতি রোগ। কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বানর ইত্যাদি প্রাণীর দ্বারা আক্রান্ত মানুষ বা প্রাণীর শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

জলাতঙ্ক রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। প্রতিরোধই এ রোগ থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র উপায়।

সিটি মেয়র শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগর ভবনের সভাকক্ষে ‘মাস ডগ ভ্যাকসিনেশন (এমডিভি) কার্যক্রম’২০১৪’ বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ২০২০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির আওতায় কেসিসি ও খুলনা সিভিল সার্জন অফিস এ সভার আয়োজন করে।

কর্মসূচির আওতায় কুকুরকে টিকা প্রদানের মাধ্যমে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ করা হবে।

সিটি মেয়র আরো বলেন, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কেসিসি’র পক্ষ থেকে কুকুর দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্বল্পমূল্যে এবং দরিদ্রদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে নগরীর বেওয়ারিশ কুকুর মেরে ফেলা হয়। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বে কোনো প্রাণী হত্যা করা সমর্থন করা হয় না। ফলে আধুনিক এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলাতঙ্কমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে হবে।

সম্প্রতি কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এটা জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতা ও ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, যেকোনো প্রাণঘাতি রোগ নির্মূলে জনপ্রতিনিধিদেরই বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি খুলনা মহানগরী থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলে নগরবাসীসহ কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্টদের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহবান জানান।

সভায় জানানো হয়, দেশে বর্তমানে কুকুরের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ যার বেশির ভাগই বেওয়ারিশ। প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ লোক কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়। খুলনা মহানগরীতেও আনুমানিক ৪ থেকে ৫ হাজার বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে।

নিয়মিত ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এ সকল কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে এবং ভ্যাকসিন দেওয়া কুকুরের গলায় বেল্ট অথবা কুকুরের শরীরে রং লাগিয়ে চিহ্নিত করা হবে।

এভাবে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের ৯০ শতাংশ কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ২০২০ সালে দেশের সকল কুকুরকে এ ভ্যাকসিনের আওতায় এনে বাংলাদেশকে জলাতঙ্কমুক্ত ঘোষণা করা হবে।

২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের আওতায় ইতোমধ্যে ৫২টি জেলা পৌরসভা ও ৫টি সিটি কর্পোরেশনে ১ম রাউন্ড এবং কক্সবাজার ও সাতক্ষীরায় ৩য় রাউন্ড এমডিভি কার্যক্রমের আওতায় ৯৩ হাজার কুকুরকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

আগামী ১ এপ্রিল থেকে খুলনা মহানগরীতে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে এবং প্রতিদিন ১০টি ওয়ার্ডের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। ঢাকা থেকে আসা একটি বিশেষজ্ঞ টিমের সঙ্গে কেসিসি’র ভেটেরিনারি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ কাজে নিয়োজিত থাকবেন।

টিকাদানের পাশাপাশি কুকুরের বংশ বিস্তার রোধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. ইয়াছিন আলির সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকার পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডাইরেক্টর, সিডিসি) অধ্যাপক বেনজির আহমেদ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে কেসিসি’র প্যানেল মেয়র-৩ রুমা খাতুন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ, স্বাস্থ্য বিভাগ, খুলনার পরিচালক ডা. মামুন পারভেজ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিজাম উদ্দিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

স্বাগত বক্তৃতা করেন কেসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আব্দুল্লাহ এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিনিয়র ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোঃ রেজাউল করিম। সভায়

কেসিসি’র কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ৯টায় সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ’২০১৪ উপলক্ষে নগরীতে আয়োজিত র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। ‘দুর্নীতি জাতীয় উন্নয়নের অন্তরায়, দুর্নীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায়’ স্লোগান নিয়ে খুলনা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এ র‌্যালির আয়োজন করে। র‌্যালিটি নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার হাদিস পার্কে এসে শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।