সুন্দর ছিমছাম শারীরিক গঠন কার না ভালো লাগে। শারীরিক স্বাভাবিক কাঠামোতে শুধু যে বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ফুটে ওঠে তা নয় এতে করে অনেক গুরুতর রোগ থেকেও নিজেকে রক্ষা করা যায়।
স্থূলতা বা মুটিয়ে যাওয়া কী?
সহজ বাংলায় বললে শরীরে যখন অতিরিক্ত চর্বি জমা হয় তখন তাকে আমরা বলি স্থূলতা। আপনি মোটা না স্বাভাবিক এটা সহজেই নির্ণয় করতে পারেন বি.এম.আই বা ‘বডি মাস ইনডেক্স’ দ্বারা।
বি.এম.আই হচ্ছে— আপনার ওজনকে উচ্চতার (মিটারে) বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তা। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ধরা যাক কারো ওজন ৭০ কেজি এবং তার উচ্চতা ১ দশমিক ৭৩ মিটার;
ওজন
কাজেই তার বি.এম.আই হবে বি.এম.আই =(উচ্চতা)২
৭০
= (১.৭৩)২
= ২৩.৪

বি.এম.আই এর শ্রেণিবিন্যাস
বি.এম.আই:
১৮ অথবা তার নিচে — আন্ডার ওয়েট
১৮ থেকে ২৫ — স্বাভাবিক ওজন
২৫ থেকে ৩০ — অতিরিক্ত ওজন
৩০ থেকে ৩৫ — স্থূলতা-ক্যাটাগরি-১
৩৫ থেকে ৪০ — স্থূলতা-ক্যাটাগরি-২
৪০ বা তার বেশি — প্রাণঘাতী স্থূলতা
মুটিয়ে যাওয়ার কারণ
নানা কারণে মানুষ মুটিয়ে যেতে পারে। যেমন:
১. অতিরিক্ত খাবার তথা বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলে।
২. শারীরিক পরিশ্রম কম হলে।
৩. বংশগত কারণে।
৪. হরমোনজনিত কারণে।
৫. মানসিক রোগ (কিছু-কিছু)
৬. কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ যেমন স্টেরওয়েড সেবন করলে।
৭. কোনো কারণে শরীরে বিপাক ক্রিয়া বা মেটাবলিসস কমে গেলে।

অনেকেই বলে আমি কম খাই কিন্তু তারপরও দিন দিন মুটিয়ে যাচ্ছি। এর কারণ হচ্ছে মেটাবলিসস কমে যাওয়া।
স্থূলতা গোটা বিশ্বে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এক অভিশাপ। আমেরিকাতে ৩৪.১ শতাংশ লোক স্থূলকায়। ২০০৮ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমেরিকাতে স্থূলতার চিকিৎসায় প্রতিবছর ব্যয় হয় ১৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের দেশও দিন দিন মোটা মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
স্থূলতা একটি মারাত্মক রোগ। এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো:
১. হৃদরোগ হবার প্রবণতা বেড়ে যায়।
২. মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ তথা স্ট্রোক।
৩. ডায়াবেটিক।
৪. অস্টিও আর্থাইটিস (বাতজনিত রোগ)।
৫. নাক ডাকা ও ঘুমের সমস্যা।
স্থূলতার কারণে এসব গুরুতর শারীরিক সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। স্থূলতার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫