খুব কম মানুষ পাওয়া যাবে, যাদের জীবনে কখনো মাথা ব্যথা হয়নি। মাথা ব্যথা অল্প থেকে তীব্র পর্যায়ে হতে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে, ৬৫ থেকে ৭৮ শতাংশ লোক জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হয়। প্রতিবছর ৪৫ তেকে ৫২ শতাংশ মানুষ মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হয়।
অধিকাংশ মাথা ব্যথাই মারাত্মক কিছু নয়। তবে কিছু কিছু মাথা ব্যথা মারাত্মক রোগের লক্ষণ হিসেবে আসতে পারে।
মাথা ব্যথার প্রকারভেদ
দুই শতাধিক ধরনের মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে মোটামুটি মাথা ব্যথাকে দুইভাগে ভাগ করা যায়।
১. প্রাইমারি— যা মারাত্মক নয়। এই পর্যায়ের মাথা ব্যথায় আছে ক) মাইগ্রেনের ব্যথা। খ) টেনশনজনিত মাথা ব্যথা।
২. সেকেন্ডারি— যা মারাত্মক হয়ে থাকে। এ পর্যায়ে রয়েছে ক) মস্তিষ্কের প্রদাহ। খ) মস্তিষ্কের টিউমার। গ) মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা মারাত্মক কোনো রোগকে নির্দেশ করে না। কিন্তু কম পরিমাণ হলেও খারাপ মাথা ব্যথার ধরন আমাদের জেনে রাখা উচিত। কারণ পরিষ্কারভাবে মাথা ব্যথা ঝুঁকিমুক্ত না। নিশ্চিতভাবে ঝুঁকিমুক্ত কোনটি তা নির্ণয় করা কঠিন। তারপরও মাথা ব্যথার কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য ইঙ্গিত করে মারাত্মক কিছুর।
কখন বুঝবেন মাথা ব্যথা কম ঝুঁকিপূর্ণ
এক. বয়স ৩০ এর কম হলে।
দুই. একি ধরনের মাথা ব্যথা বারবার হলে।
তিন. কোনো ঝুঁকিপূর্ণ রোগের ইতিহাস না থাকলে। যেমন এইচআইভি।
চার. মাথা ব্যথার সাথে অন্য কোনো স্নায়ুবিক দুর্বলতা— (যেমন হাত, পা অবশ হয়ে যাওয়া) না থাকলে।
কখন বুঝবেন মাথা ব্যথা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
এক. মাথা ব্যথার সাথে জ্বর বা শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
দুই. আগে থেকেই কোনো রোগ যেমন এইডস, মস্তিষ্কের প্রদাহ থাকলে।
তিন. মাথা ব্যথা ৪০ বছরের পর থেকে শুরু হলে।
চার. মাথা ব্যথার সাথে স্নায়ুবিক দুর্বলতা থাকলে।
পাঁচ. হঠাৎ নতুনভাবে মাথা ব্যথা শুরু হলে।
মাথা ব্যথার সাথে এসব ঝুঁকিপূর্ণ আলামত থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
মাথা ব্যথা প্রতিরোধের উপায়
১. ম্যাসেজ করা। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে যারা ৪৫ মিনিট শরীর ম্যাসেজ করে তাদের মাথা ব্যথা যারা ম্যাসেজ করে না তাদের চেয়ে কম হয়। শরীর ম্যাসেজ করলে চর্বিযুক্ত মাংসেপেশীগুলো হালকা হয় যাতে করে মাথা ব্যথা কম হয়।
২. গভীরভাবে শ্বাস নিন। বুক ভরে শ্বাস নিন। এবং এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুণে ভেতরে বাতাস ঢুকান। আবার এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুণে শ্বাস ছাড়ুন।
৩. নিয়মিত গান শুনুন। এটা আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখবে। এবং মাথা ব্যথার প্রবণতা কমে যাবে।
৪. নিয়মিত শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করুন। এটা হতে পারে জগিং, সাঁতার, সাইক্লিং বা নাচ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫