ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসকের কাছে গেলেও রক্তচাপ হতে পারে

ডা. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, বিভাগীয় সম্পাদক, স্বাস্থ্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৫
চিকিৎসকের কাছে গেলেও রক্তচাপ হতে পারে

রক্তচাপ নিয়ে আমরা সবাই কম বেশি ভাবি। আমাদের ভাবনায় কাজ করে আমার প্রেসার কি বেড়ে গেলো? আমার প্রেসার কমে যায়নি তো? রক্তচাপ বা প্রেসার নিয়ে উৎকণ্ঠা জয় করতে আমাদের এ সম্পর্কে সাধারণ কিছু ধারণা থাকা জরুরি।



রক্তচাপ বা প্রেসার কী
রক্তনালী দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হবার সময় রক্তনালীয় দেওয়ালে রক্ত যে চাপ দেয় তাকেই ব্লাড প্রেসার বলে।

স্বাভাবিক রক্তচাপ
রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক সীমার মধ্যে আছে কি নাই সেটা বুঝতে হলে এর শ্রেণিবিন্যাস আমাদেরকে জানা জরুরি।

একজন পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের রক্তচাপের শ্রেণিবিন্যাস

শ্রেণি                           সিসটোলিক রক্তচাপ       ভায়াসটনিক রক্তচাপ

নিম্ন রক্তচাপ                          <৯০ মি. মি পারদ              <৬০ মি. মি. পারদ
স্বাভাবিক রক্তচাপ                    ৯০-১১৯     ’’                    ৬-৭৯       ’’
স্বাভাবিক কিন্তু উচ্চ রক্তচাপে
পরিণত হতে পারে                   ১২০-১৩৯    ’’                    ৮০-৮৯      ’’
উচ্চ রক্তচাপ গ্রেড-১                 ১৪০-১৫৯    ’’                    ৯০-৯০      ’’
উচ্চ রক্তচাপ-গ্রেড-২                ১৬০-১৭৯    ’’                    ১০০-১১৯     ’’
উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কিত জরুরি অবস্থা    ১৮০    ’’                     ১১০         ’’

উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ
আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা আপনি একজন ‘হাইপারটেনসিভ’ রোগী তা কিভাবে বুঝবেন?

১. অনেক ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। এ জন্য একে ‘নীরব রোগ’ বলে। আমাদের অজান্তেই এ রোগ বাসা বেধে বসে আছে অথচ আমরা বুঝতেই পারি না। এ জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত অন্তত মাসে একবার।

২. অনেকের রক্তচাপ বেশি থাকলে মাথা ঘুরতে পারে।

৩. অবসাদ লাগা।

৪. ঘাড়ে, মাথায় অস্বস্তিকর অনুভূতি।

রক্তচাপ মেপে কখন বুঝবেন আপনার রক্তচাপ বেশি
কোনো কারণে আপনি বাসায় দোকানে বা চিকিৎসকের কাছে রক্তচাপ মাপবেন। দেখা গেলো সেটা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। আপনি কি তাহলে ‘ব্লাড প্রেসারের’ রোগী হয়ে গেলেন? উত্তর, না। একবার মেপেই আপনাকে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বলা যাবে না।

নানা কারণে অনেকেরই রক্তচাপ বেশি আসতে পারে। যেমন, রাতে ঘুম কম হলে, দুঃশ্চিন্তা করলে, ভয় পেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, চিকিৎসকের কাছে গেলেও অনেকের রক্তচাপ বেশি আসতে পারে। একে বলে ‘হোয়াইট কোট হাইপারটেনশন’।

পরিপূর্ণ বিশ্রাম, স্বাভাবিক নিদ্রা, দুঃশ্চিন্তামুক্ত থেকে পর পর তিনদিন রক্তচাপ মাপুন। (সকাল, দুপুর ও রাত, তিনবেলা)। তাতে যদি দেখা যায় আপনার রক্তচাপ বেশি আসছে তাহলে ধরে নিতে হবে আপনি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে মেশিন দিয়ে মাপছেন এবং যাকে দিয়ে মাপাচ্ছেন তা ঠিক আছে কিনা। একই ভালো মেশিন দিয়ে একই দক্ষ লোকের কাছে প্রেসার মাপুন এতে ত্রুটিমুক্ত রক্তচাপ পাবেন।

উচ্চ রক্তচাপ হলে করণীয়
চিকিৎসকের কাছেই যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হয় তবে উনি পরিকল্পনা মাফিক চিকিৎসা দেবেন। বাসায় বা দোকানে রক্তচাপ মাপার পর আপনার রক্তচাপ বেশি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ওষুধের দোকানদারের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ এমনও হতে পারে, শরীর চর্চা বা জীবনযাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে পারে। এছাড়া ওষুধ যদি লাগেও তবে সে ওষুধ নির্বাচনে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

সব উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সব বয়সের মানুষকে দেয়া যায় না। উচ্চ রক্তচাপ কতো দিন ধরে, এর সঙ্গে অন্য রোগ আছে কিনা, অনেক কিছু বিবেচনা করে পরে ওষুধ দিতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।