রংপুর: উত্তরাঞ্চলের মানুষকে ডায়রিয়ার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে গত ৩৫ বছর ধরে রংপুরে সরকারিভাবে উৎপাদিত হচ্ছে খাবার স্যালাইন।
উৎপাদিত এই স্যালাইন বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার সিভিল সার্জন অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মেডিকেল কলেজ ও সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের অধিকাংশ সময়ই রংপুরে খাবার স্যালাইন উৎপাদন হয়। কিন্তু মে থেকে জুলাই এই তিন মাসে স্যালাইনের চাহিদা বেড়ে যায়।
তাই লোকবল বাড়ালে এই প্লান্ট থেকে উত্তরাঞ্চলের খাবার স্যালাইনের সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতো।
সূত্র জানায়, ১৯৮০ সালে তৎকালীন সদর হাসপাতালের প্রথম তলায় সিভিল সার্জনের অধীনে খাবার স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্লান্টটি চালু করা হয়।
নানা সংকট থাকা স্বত্ত্বেও দৈনিক ৩৩ হাজার ২৫০ প্যাকেট খাবার স্যালাইন উৎপাদন হয়।
যা রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের মোট ১৬টি জেলার সিভিল সার্জন অফিসে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করে থাকেন সংশ্লিষ্টরা।
স্যালাইন উৎপাদনকারী প্লান্টের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ হিল বাকী বাংলানিউজকে বলেন, এখানকার উৎপাদিত স্যালাইন বিভিন্ন কোম্পানির খাবার স্যালাইনের চেয়ে গুণগত মান অনেক ভালো।
এই স্যালাইন ১৬ জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় ছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং রাজশাহী ও রংপুর সিটি করপোরেশন, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে প্রতিমাসে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আব্দুল্লাহ হিল বাকী জানান, এই প্লান্টের উৎপাদিত স্যালাইনের সব কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করা হয়।
স্যালাইনের চাহিদার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, বছরের মে থেকে জুন মাসে ডায়ারিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ এবং রাজশাহীর বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে এর চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
ওই সময় রির্জাভের ওপর ভিত্তি করে স্যালাইন সরবরাহ করা হয় বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্লান্টটি পরিচালনার জন্য সরকারিভাবে যে লোকবল থাকার কথা ছিল তা এখানে নেই। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে স্যালাইনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
প্লান্টটির ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ হিল বাকী জানান, প্লাটটিতে মোট ৩০ জন কর্মী থাকার কথা। আছে ১৯ জন। এদের মধ্যে ৪ জন দক্ষ শ্রমিক।
রংপুর সিভিল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে প্লান্টটির উৎপাদিত স্যালাইন উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছে।
‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিশেষ সেল কর্তৃক খাবার স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্লান্টটি পরিচালিত হয়। তবে স্থানীয়ভাবে তদারকির দায়িত্বে আছে সিভিল সার্জন কার্যালয়,’—যোগ করেন তিনি।
রংপুর ছাড়াও সরকারিভাবে ঢাকা, বরিশাল, কুমিল্লা এবং যশোরে খাবার স্যালাইন উৎপাদন করা হয় বলে জানান রংপুরের সিভিল সার্জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৫