ঢাকা: পিতা-মাতার খর্বাকৃতির কারণে অনেক সময় শিশুরাও খর্বাকৃতির হয় এটি সঠিক নয়। বাবা-মা লম্বা হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় দেখা যায় সন্তান ছোট আকৃতির হয়।
সোমবার(এপ্রিল ১৩) দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার হলরুমে খর্বাকৃতি মুক্ত গ্রাম প্রতিষ্ঠা বিষয়ক এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুভাষ চন্দ্র
সরকার, ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর রিয়াদ মাহমুদ,আডিএসকে এর নির্বাহী পরিচালক ড. দিবালোক সিংহা প্রমুখ।
প্রধান অতিথি সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, অপুষ্টিই খর্বাকৃতির কারণ। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই সচেতনতার অভাবেই এই অপুষ্টির ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই।
আগে আমরা শুধু ডায়রিয়া বা কলেরা প্রতিরোধেই স্যানিটেশনের প্রতি গুরুত্ব দিতাম কিন্তু আজকের কর্মশালার মাধ্যমে এটা পরিষ্কার হলো যে খর্বাকৃতি
রোধেও স্যানিটেশনের বিকল্প নেই। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে যা করার আমরা তাই করব।
ড. দিবালোক সিংহা বলেন, আমাদের দেশের শিশুরা এখন যে হারে খর্বাকৃতির হচ্ছে তা ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধুমাত্র পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা ছাড়াও আর কি কি কারণে শিশুরা এমন হচ্ছে তা নির্ধারণ করে সঠিক কর্মপদ্ধতির আলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারি ও বেসরকারিভাবে কাজ করতে হবে।
শিশুর পুষ্টিহীনতার অন্যতম কারণ মায়ের পুষ্টিহীনতা। এ কারণে মায়েদের স্বাস্থ্যের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে।
ইউএসটি’র নির্বাহী পরিচালক ড. আনোয়ার কামাল বলেন, খর্বাকৃতি শিশু হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। শুধুমাত্র স্যানিটেশন ও অপুষ্টিকর খাদ্যের
কারণেই এটা হচ্ছে এমনটি বিবেচনা করা ঠিক নয়। সার্বিক পরিবেশও এর জন্য অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, গ্রামের মায়েরা স্বল্প শিক্ষিত হওয়ায় অনেক সময় সচেতনভাবে তারা শিশুদের যত্ন নিতে পারে না। তাই গ্রামের মায়েদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে
বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ করতে হবে। আমাদের একটি ধারণা পিতা-মাতার খর্বাকৃতির কারণে অনেক সময় শিশুরাও খর্বাকৃতির হয়। কিন্তু এটি শুধুমাত্র ধারণা, বাস্তবে তা নয়।
আশার কথা হলো, বাংলাদেশ যেভাবে স্যানিটেশন সমস্যাকে মোকাবেলা করেছে এই সমস্যাকেও স্বল্প সময়ের মধ্যে মোকাবেলা করতে পারবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য শুধুমাত্র পরিবার নয় সমাজ ও রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে হবে।
এড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সুবোধ কে দাস বলেন, শিশুকে নিয়ে ভাবতে হলে আগে মা’কে নিয়ে ভাবতে হবে। মায়েদের খর্বাকৃতির কারণে শতকরা ১০ ভাগ শিশুও খর্বাকৃতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মায়েরা সচেতন হলে পরবর্তী প্রজন্মে খর্বাকৃতি রোধ করা সম্ভব। এ সমস্যা সমাধানে সার্বিকভাবে পরিবার ও সমাজের লোকদেরকেও ভাবতে হবে।
বাংলাদেশ সময় : ২০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৫
এজেডকে/ আরআই