ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জ্বালানি সংকটে মেহেরপুরে ৩ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
জ্বালানি সংকটে মেহেরপুরে ৩ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেহেরপুর: স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জ্বালানি তেলের জন্য বরাদ্দ না পাওয়ায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও  জেলার দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্ব্যুলেন্স সেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে, জ্বালানি তেল বাবদ প্রায় ১৬ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় মেহেরপুর ফিলিং স্টেশন থেকে মাঝে-মধ্যেই এসব হাসপাতালে ‍তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।


 
সর্বশেষ মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন দোদুলের অনুরোধে তেল দিলেও বেশিদিন এভাবে দেওয়া হবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছে মেহেরপুর ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা বাকি থাকায় পাম্প মালিক তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এতে প্রায় ২০ দিন ‍অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ ছিল। পরে এমপির সুপারিশে  তেল দেওয়া শুরু করলেও এটাও বেশিদিন চালু থাকবে না বলে জানিয়েছেন তেল পাম্প মালিক।

এদিকে, একই অবস্থা মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ‍অ্যাম্বুলেন্স সেবাতেও।

এসব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বাকি থাকায় মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চলতি বছরের ২০ জুন থেকে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে চলছে না অ্যাম্বুলেন্স। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গরিব রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট ২ লাখ ১২ হাজার ৪২৬ টাকা বকেয়া রয়েছে হাসপাতালের। চলতি বছরের জুন মাসে বাজেট আসার কথা থাকলেও আসেনি। তাই টাকা বাকি থাকায় তেল দিচ্ছে না পাম্প মালিক।

অন্যদিকে, তেল পাম্পের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় দফায় দফায় বন্ধ থাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য অফিসার ডা. মারুফ হোসেন জানান, তেল পাম্পের মালিকের কাছে অনেকবার মৌখিক অনুরোধ করেও তেল নেওয়া যায়নি। তাই অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরো জানান, অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে আয়কৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে খরচ করার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে মেহেরপুর জেলার জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকার তেলের বকেয়া রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে বার বার চাহিদা দেওয়ার পরেও তেলের কোনো বাজেট আসেনি।

তিনি বলেন, তেল পাম্প মালিককে বার বার অনুরোধ করে তেল নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছে।

মেহেরপুর ফিলিং স্টেশনের মালিক আশাদুল ইসলাম আশা বাংলানিউজকে জানান, মেহেরপুর সদর হাসপাতাল এবং গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে তার ১৬ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৭ টাকা পাওনা রয়েছে। এই বিশাল বকেয়ার কারণে তার ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে বার বার বলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ মেহেরপুর-১ আসনের এমপির অনুরোধে সদর হাসপাতালের জন্য আবারো তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এ অনুরোধ বেশীদিন রাখা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী আফতাব উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, মেহেরপুর জেলার হাসপাতালগুলো থেকে চলতি  জুনের ১৪ তারিখে আয়-ব্যয়ের হিসাব ও তেলের চাহিদাপত্র চাওয়া হয়। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে তারা আয়-ব্যয়ের হিসাব ও চাহিদাপত্র জমা দেয়নি। ফলে বাজেট দিতে সমস্যা হয়েছে।

তবে চলতি মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে যেসব স্থানে তেলের টাকা পৌঁছায়নি তাদের জন্য বাজেট করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।