ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেক হাসপাতাল

গেটে পৌঁছাতে রোগীর ভোগান্তি, স্বজনদের মোটরসাইকেল চুরির ভয়

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
গেটে পৌঁছাতে রোগীর ভোগান্তি, স্বজনদের মোটরসাইকেল চুরির ভয় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের প্রবেশ পথে রাস্তার দু’ধারে জুড়ে অ্যাম্বুলেন্স-এর সারি তো রয়েছেই। এতে আরও যোগ হয়েছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং।

ফলে জরুরি বিভাগের গেট পর্যন্ত পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রোগীদের।

এই যানজট শুরু হয় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হতে বেজে যায় দুপুর ২টা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হঠাৎ কেউ এলে দ্বিধায় পরে যেতে পারেন- এটা কোনো হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, নাকি গাড়ির মেলা চলছে এখানে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা হাসপাতালে কেন পার্কিং ব্যবস্থা নেই-এ নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন কেউ কেউ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীও বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, সারাদিন-রাত যদি চিকিৎসকদের প্রাইভেট কার, রোগীর স্বজনদের প্রাইভেট কার, রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা আসতেই থাকে, তাহলে এ অবস্থা কিভাবে পাল্টাবে!

চিকিৎসা নিতে সরকারি চাকরিজীবী রাজিবুল এসেছেন ঢামেক হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের গেট পর্যন্ত পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হওয়ায় বিরক্ত তিনি। সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে নেমেই সামনে পেয়ে কয়েকজনকে বলেন তার আক্ষেপের কথা।

“অল্প টাকায় ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় বলেই এখানে এত মানুষ আসে। শুধু চিকিৎসা ভালোই হলেই হবে! ভালো ব্যবস্থাপনাও জরুরি। হাসপাতালে যখন রোগী আসেন, তখন তার অপেক্ষা করার মতো অবস্থা থাকে না। এমনিতেই উত্তরা থেকে ঢাকা মেডিকেল আসতে জীবন বের হয়ে যাওয়ার যোগার, আর এত বড় হাসপাতালে কেন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে না”।

রয়েছে স্বজনদেরও ভোগান্তি। রাজধানীর বাড্ডা থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে এসেছেন সাখাওয়াত হোসেন। হাসপাতালের নতুন ভবনে তার মা চিকিৎসাধীন। তারপরও এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন তিনি।

এগিয়ে গিয়ে কোথায় যাবেন প্রশ্ন করতেই উত্তরে বলেন, হাসপাতালে মা ভর্তি। কিন্তু মোটরসাইকেল রেখে যাওয়া নিরাপদ মনে হচ্ছে না। আমি ছোট চাকরি করি। শুনেছি ঢামেক জরুরি বিভাগের সামনে থেকে প্রায়ই মোটরসাইকেল চুরি হয়। যদি একটা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকতো, ভালো হতো।

হাসপাতালের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বলেন, পার্কিং ব্যবস্থা থাকলে কোন গাড়ি এলো, কোনটা বের হলো হিসাব থাকে। এখন যে যার ইচ্ছা মতো আসছে, বের হয়ে যাচ্ছে। যেখানে ইচ্ছা গাড়ি রাখছে, চুরি তো হতেই পারে!

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নির্ধারিত অ্যাম্বুলেন্স রাখার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কোনো ব্যক্তির গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। সেটা জানেন, এমন মানুষও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রাখেন।

নাম গোপন রাখার শর্তে ওই কর্মচারী আরও বলেন, কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কোথায় যায়, তা তো বলা কঠিন। পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে, অপরাধ প্রতিরোধ করা যায়।

এ প্রসঙ্গে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজের আলাপ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) খাজা আব্দুল গফুরের সঙ্গে।

জরুরি বিভাগের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চুরি হওয়ার অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, ঢামেক হাসপাতালের জন্য পার্কিং ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই রয়েছে। কিন্তু জায়গা না পাওয়ায় বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। ছোট ছোট যে জায়গা পাওয়া যায়, তাতে কেবল মোটরসাইকেল রাখার ব্যবস্থা যায়, গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। পার্কিং ব্যবস্থা চালু হলে হাসপাতাল থেকে যানবাহন চুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।