প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার বাটনে চাপ দিলেই টোকেন বের হয়ে এলো। টোকেন নিয়ে তিনি সরাসরি গেলেন টোকেনে উল্লেখিত চিকিৎসকের কক্ষে।
কোনো মেডিকেল কার্ডের ঝামেলা নয়। তৃতীয় কারো সঙ্গে কথা বলার দরকার নেই। নেই সিরিয়াল দেয়ার ঝক্কি। অত্যাধুনিক এই পদ্ধতিতে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, ক্রমে আধুনিক হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার। প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে চলমান এই কেন্দ্রটিকে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করার কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। ডেন্টাল, প্যাথলজি, ফিজিওথেরাপির জন্য বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র যোগ করা হয়েছে। আলট্রাসনো ও এক্সরে মেশিনের উন্নয়ন (আপগ্রেড) করা ও নতুন যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সরেজিমন দেখা যায়, মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করাসহ বিভিন্ন আধুনিক সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চিকিৎসাকেন্দ্রের পাশে প্রধান চিকিৎসকের জন্য বরাদ্দ করা একটি পুরনো ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি ভবনটি সংস্কার করে চিকিৎসাকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট হিসেবে খোলা হয়েছে। এখানে প্যাথলজি, ডেন্টাল ইউনিট ও আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের জন্য কার্ডিয়াক সুবিধা সম্পন্ন একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের উপ-রেজিস্ট্রার আবু জাফর বাংলানিউজকে জানান, আউটডোরের পাশাপাশি ইমার্জেন্সি ইউনিট করা হয়েছে। আগে ইমার্জেন্সি ইউনিট পূর্ণাঙ্গ ছিল না। ইমার্জেন্সি ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা একজন বা একাধিক চিকিৎসক দায়িত্বে থাকবেন।
তিনি আরো জানান, আউটডোরে আগে একই চিকিৎসক একাধিক রোগের চিকিৎসা দিতেন। এতে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক চিকিৎসা পেতেন। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য একটি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি ইউনিট খোলার প্রক্রিয়া চলছে।
মেডিকেল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ওষুধ নেয়ার সুযোগ অপব্যবহারের অভিযোগ ও মেডিকেল স্টাফদের কারো কারো বিরুদ্ধে ওষুধ চুরির অভিযোগ পাওয়া যেত। এখন এটা অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। কে কখন, কী কী ওষুধ নিচ্ছে সব রেকর্ড থাকবে।
মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বাংলানিউজকে জানান, পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তুলতে একটি অর্গানোগ্রাম প্রস্তুত করা হয়েছে। সিটি স্ক্যান মেশিনসহ অত্যাধুনিক মেশিন কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নয়জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ইমার্জেন্সির জন্য ছয়জন মেডিকেল অফিসার, ছয়জন টেকনোলজিস্ট ও চারজন নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়ে ইউজিসির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এখন পার্টটাইমে দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ডা. তবিবুর রহমান আরো বলেন, বর্তমান সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঐকান্তিক চেষ্টায় মেডিকেল সেন্টারটিকে অত্যাধুনিক কনসালটেশন ও ডায়গনস্টিক সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। এখানে কখনো ছোট-খাট অনিয়ম হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অটোমেশনের আওতায় সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সংক্রান্ত সব রেকর্ড থাকছে। চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্স, কী পরিমাণ ওষুধ দেয়া হচ্ছে, সব রেকর্ড অটোমেশন মেশিনে থাকবে। এ পরিকল্পনা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে আমরা শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসসেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এসআই