অধিক রোগের শহর ঢাকায় এই প্রথমবারের মতো কলেরার বিস্তার নিয়ে জেনোমিক গবেষণার পর তা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। এটি আইসিডিডিআর,বি ও ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের একটি যৌথ গবেষণা।
কলেরা একটি প্রাচীন রোগ হিসেবে চিহ্নিত হলেও বর্তমানে রোগটির সংক্রমণ বাড়ছে। দেশে প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ লোক এই রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবছর ৩০ থেকে ৫০ লাখ লোক এই রোগে ভুগছে। সারাবিশ্বে প্রতি বছরে প্রায় ১২ লাখ লোক এই রোগে মারা যায়।
অদ্ভুতভাবে রাজধানীতে বছরে দু’বার কলেরার প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি হয়। এবং এ কারণে ঢাকাকে অধিক রোগের শহর বলে উল্লেখ করেছে আইসিডিডিআর,বি।
কলেরার সংক্রমণ কি কারণে হচ্ছে এবং প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কি করণীয় তা খতিয়ে দেখতে গবেষকরা ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মহাখালী আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কলেরা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। ১০৩টি পরিবারের ২২৪ জন রোগীর কাছ থেকে ৩০৩টি ভিব্রিও কলেরার নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।
গবেষণা চলাকালে সংরক্ষিত ওইসব নমুনার পরিবারের সদস্যরাই পাঁচদিনের মধ্যে হাসপাতালে কলেরা রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, কলেরার প্রায় ৮০ শতাংশ সেকেন্ডারি ইনফেকশন গৃহস্থালির জিনিসপত্রের মাধ্যমে ছড়ায়। এর মানে দাঁড়ায়, বাহ্যিক পরিবেশের চেয়ে ঘরে অভ্যন্তরীণভাবে এ রোগের জীবাণু বেশি ছড়ায়।
এ কারণে ঘরে কলেরা প্রতিরোধের প্রতি জোরদার করার পরামর্শ দেন তারা।
গবেষণাটির প্রধান ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের ডা. ডেরিল ডোম্যান জানান, জেনোমিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, কলেরা সহজেই পরিবারের মাধ্যমে ছড়ায়। পারিবারিকভাবে কলেরা সংক্রমণের হার কমাতে আমরা এদেশের স্থানীয় সচেতনতা কার্যক্রমগুলো ব্যাপকভাবে জোরদার করতে পারি। নইলে এই রোগ মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। আর এসব সিদ্ধান্তে উপনীত হতেই আমরা জেনেটিক টুলস ব্যবহার করেছি। যে কারণে আমরা শতভাগ নিশ্চিত।
এ বিষয়ে গবেষণাটির সহ-প্রধান আইসিডিডিআর,বি’র ডা. ফেরদৌস কাদরী বাংলানিউজকে জানান, কলেরা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিষ্কার পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াও টিকা পদ্ধতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৮
এমএএম/এএ