বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে একথা জানান তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, আপনারা জানেন চীনে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করেছে লকডাউনের মাধ্যমে।
‘করোনা ভাইরাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। লকডাউন করাটাই আক্রান্ত এলাকার জন্য একমাত্র উপায়। যার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাবে সেটা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একমাত্র উপায় হলো লকডাউন করে দেওয়া। ’
কোনো এলাকা লকডাউন করা যেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসীরা যারা আসেন তার মধ্যে দু’একটি এলাকার কথা আমাদের খবরে আছে সেটা হলো মাদারীপুর, ফরিদপুর ও শিবচর এরিয়া। এসব এলাকায় করোনা বেশি দেখা দিচ্ছে। এসব এলাকার অবস্থার যদি অবনতি ঘটে তাহলে আমরা লকডাউন করবো।
‘দেশের অন্য এলাকা থেকে এসব এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। আমাদের আক্রান্ত ১৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগ সেখানকার। আমরা যেটা খবর পাই সেখানকার লোক কোয়ারেন্টিনে দেশি-বিদেশেও থাকে বেশি। সে কারণে এসব এলাকাকে অধিক বিপদজনক ভাবছি। আগামীতে যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা অবশ্যই লকডাউন করবো। ’
এই মুহূর্তে লকডাউন করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হয় বা আরো বেশি আক্রান্ত হয় তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আমরা অন্য দেশের তুলনায় এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা কম, মৃত্যু সংখ্যা মাত্র একজন।
করোনা ছড়িয়ে পড়লে লক্ষাধিক কিট দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য এত ব্যবস্থা। কিট কখন প্রয়োজন হয়, যখন অনেক রোগী আসতে থাকে। রোগী না আসলেতো পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। যারা জানুয়ারি মাসে এসেছেন তাদের ১৫ দিন পার হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারিতে যারা এসেছেন তাদেরও ১৫ দিন পার হয়ে গেছে। তাদের পিছনে দৌড়ানোর কোনো কারণ নেই।
‘গত ১৫ থেকে ২০ দিনে যারা এসেছেন তাদের আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সে লিস্টও বিমানের কাছ থেকে পেয়ে গেছি। সেই লিস্ট সব জেলায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে প্রবাসীদের খুঁজে বের করতে পারেন। বর্তমানে ৫ হাজার কোয়ারেন্টিনে নিয়েছি আরো পেলে নেবো কোনো সমস্যা নেই।
ডাক্তারদের নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইরে তিনি বলেন, আমরা খুবই সচেতন। ডাক্তারদের নিরাপত্তায় যত রকমের ব্যবস্থা আছে নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য গাউন, মাস্কের অর্ডার দিয়েছি। প্রতিদিন কয়েক হাজার করে পাচ্ছি। এগুলো সব ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য। এটা নিয়ে বিভ্রান্তির ছড়ানোর কোনো কারণ নেই। দেশের সব ডাক্তার সহযোগিতা করবে এটা আমরা আশা করি। ডেঙ্গুর সময় তারা সবাই কাজ করেছে। আগামীতেও তারা কাজ করবে।
গণস্বাস্থ্যের কিটসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে বিষয়ে আমাদের ধারণা নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। ৫ হাজারেরও বেশি লোক কোয়ারেন্টিনে রেখেছি। এটা আমাদের বিরাট একটা সফলতা। আর যারা বিভ্রান্ত করছে তাদের অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। এটাও বলা হয়েছে প্রয়োজন হলে জেলে দিতেও আমরা পিছপা হবো না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
জিসিজি/এএ