ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৫ দিন অক্সিজেন না পাওয়া করোনা রোগী নিজেই করালেন পরীক্ষা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০
৫ দিন অক্সিজেন না পাওয়া করোনা রোগী নিজেই করালেন পরীক্ষা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল

ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনে ভর্তি করোনা রোগী মো. তালহা অবশেষে চিকিৎসকদের নির্দেশক্রমে সিটিস্ক্যান ও এক্সরে করিয়েছেন। তবে অনেক খুঁজেও অক্সিজেন সিলিন্ডার না পেয়ে তিনি একটু সুস্থ বোধ করার পর নিজেই গিয়ে পরীক্ষাগুলো করিয়েছেন।

বুধবার (১০ জুন) দুপুরের দিকে ঢামেকে ভর্তি করোনা রোগী তালহা নিজেই এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার (৯ জুন) আমি একটু সুস্থ বোধ করলে অক্সিজেন সিলিন্ডারের আর আশা না করে নিজেই ভবনের নীচ তলায় গিয়ে সিটিস্ক্যান ও এক্সরে করিয়েছি।

এখন আমি মোটামুটি সুস্থ আছি। ’

চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়াই এখন আমি শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো মতো নিচ্ছি। ’

তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘হাসপাতালের বেসরকারি কর্মচারী ও সরকারি ওয়ার্ডবয়দের সবাইকে আরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে তাহলেই রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। ’

কাজের ক্ষেত্রে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি আছে বলে তিনি মনে করেন।

প্রসঙ্গত, ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে ভর্তি হওয়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী অক্সিজেন সিলিন্ডার না পেয়ে চিকিৎসকদের দেওয়া কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল। হাসপাতালে ভর্তির প্রায় ছয়দিন অতিবাহিত হলেও অক্সিজেন সিলিন্ডার পাননি তিনি। অথচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, হাসপাতালে সাড়ে চার হাজার সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে।

সোমবার (৮ জুন) বিকেলে কথা হয় ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবন করোনা ইউনিট-২ এর ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করোনা রোগী মো. তালহার সঙ্গে।

তালহা বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত ২ জুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে (শ্বাসকষ্টজনিত কারণে) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে ভর্তি হই। ভর্তির পরপরই চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন, সিটি স্ক্যান ও ইসিজি করতে হবে। ’

তারপর থেকেই চিকিৎসকের নির্দেশনায় এসব পরীক্ষা করার জন্য তিনি একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার খুঁজতে থাকেন। কারণ তার পরীক্ষা করতে হলে ভবনের নীচ তলায় যেতে হবে। প্রয়োজন হবে হুইল চেয়ার এবং অক্সিজেনের।

হাসপাতালে কেউ তাকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের সন্ধান দিতে পারেনি। ওয়ার্ডে তিনি সেন্ট্রাল অক্সিজেনের মাধ্যমে ছিলেন। পরীক্ষায় জন্য এখন নিচে যেতে হলে তার সিলিন্ডার অক্সিজেন দরকার। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিন্তু অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া পরীক্ষা করতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তির পাঁচদিন হয়ে গেলেও তিনি পরীক্ষা করাতে পারেননি। তার পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর চিকিৎসকদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে পরীক্ষা করানোর দরকার নেই। আগে শ্বাসকষ্ট কমুক, তারপর পরীক্ষা। এরপরও যদি অক্সিজেন সিলিন্ডার দরকার হয় তাহলে ওখানকার ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলুন। ’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাড়ে চার হাজার সিলিন্ডার আমাদের কাছে মজুদ রয়েছে। কিছু কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার ওয়ার্ডে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডে থাকা সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পাশাপাশি কোনো কারণে রোগীর অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন হলে, সেখানকার ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই পাওয়া যাবে। ’

এদিকে ওই ভবনে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আরেক ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেনকে তিনি বলে দিয়েছেন, যত রকম সহযোগিতা লাগবে তিনি করে দেবেন। ’

এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তো আমি জানি না। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০
এজেডএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।