ঝালকাঠি: মহামারি করোনাকালে দক্ষিণাঞ্চলে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মতো ঝালকাঠিতেও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
জেলা সদরসহ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন নারী-শিশুসহ বহু রোগী। হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত বেডের থেকে বহুগুন বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায়, এখন রোগীদের ওয়ার্ডের ফ্লোর ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এক কথায় বাড়তি এ রোগীর চাপকে সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় দখিনের সব থেকে ছোট ৪ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলায় ২০৮ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় জীবনরক্ষাকারী আইভি বা ইন্ট্রাভেনাস (শিরায় দেওয়া হয়) স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে হাসপাতালগুলোতে। ফলে রোগীদের প্রয়োজন অনুসারে সরকারিভাবে স্যালাইন সরবরাহ করার কার্যক্রমটি উপক্রম হয়।
এ অবস্থায় বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা নিজ উদ্যোগে সোমবার সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে স্যালাইন সরবরাহ করে দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডা. রতন কুমার ঢালী জানান, হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা হাসপাতালগুলোতে বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের সংকট দেখা দেয়। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এরইমধ্যে উপজেলা হাসপাতালগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় স্যালাইন সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করেছি। দ্রুত স্যালাইনগুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে।
তবে বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ম্যানেজ করা হচ্ছে। সোমবার স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঝালকাঠি-২) আমির হোসেন আমু তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২ হাজার আইভি স্যালাইন দিয়েছেন। যেখান থেকে ১ হাজার স্যালাইন ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও ১ হাজার স্যালাইন নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি হাসপাতালগুলোতে কিছু স্যালাইন স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হয়েছে।
এদিকে নলছিটি ও রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিত্তবানরা ব্যক্তি উদ্যোগে স্যালাইন দিয়ে সহায়তা করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রাজাপুর নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে ১৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির স্যলাইন সংকটের কথা তুলে ধরা হয় এবং স্যালাইন দিয়ে রোগীদের চিকিৎসায় সহয়তা করার আহ্বান জানানো হয়। পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রাজাপুরের সেই আইডি থেকে সহযোগিতা করার জন্য সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বেশ কয়েকজনের নামোল্লেখ করে ধন্যবাদ জানানো হয়।
চিকিৎসকরা জানান, তীব্র গরমে গত এক সপ্তাহে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত এক হাজার মানুষ। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন তারও বেশি রোগী। প্রচণ্ড গরমে খাদ্যাভ্যাসের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২১
এমএস/এএটি