সিলেট: করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সিলেট বিভাগের নিবন্ধিত ৯০ হাজার ১৪৩ টিকা গ্রহীতা। পর্যাপ্ত ডোজ না থাকায় এবং মজুত ভায়াল শেষ হওয়ার আগে পুনরায় ভ্যাকসিনের চালান না আসলে তাদের অপেক্ষমান থাকতে হবে, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৩১ জানুয়ারি সিলেটে বিভাগে চার লাখ ৪৪ হাজার করোনার টিকা আসে। এর মধ্যে সিলেটে আসে দুই লাখ ২৮ হাজার ডোজ। বাকিগুলো অন্য তিন জেলাতে বণ্টন করা হয়। এরপর গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেটে গণটিকা দেওয়া শুরু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, টিকা নেওয়ার জন্য তিন লাখ ৭৫ হাজার ৪১১ জন নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ নেন তিন লাখ ৪৪২ জন। প্রথম ডোজের জন্য এখনো অপেক্ষমান আছেন ৭৪ হাজার ৯৬৯ জন। এ যাবত দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ২৮৯ জন। এখনো দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অপেক্ষমান রয়েছেন এক লাখ ২৬ হাজার ১৫৩ জন। বিপরীতে ভায়াল আছে তিন হাজার ৬০১টি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, একটি ভায়ালে ১০টি করে ডোজ থাকে। সে হিসেবে ৩৬ হাজার ১০ জনকে টিকা দেওয়া যাবে। পুনরায় ভ্যাকসিনের চালান না আসা পর্যন্ত ৯০ হাজার ১৪৩ জনকে দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষমান থাকতে হবে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় এক লাখ ৫২ হাজার ২৫৬ জন করোনা ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ পেয়েছেন এক লাখ ১৪ হাজার ১১ জন। প্রথম ডোজের জন্য অপেক্ষমানদের সংখ্যা ৩৮ হাজার ২৪৫ জন। রোববার পর্যন্ত জেলায় দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৪৪৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিতে এখনো ৪৬ হাজার ৫৬৫ জন বাকি। বিপরীতে জেলায় ১৭ হাজার ৪৬০ ডোজ টিকা মজুত আছে। সে হিসেবে ২৯ হাজার ১০৫ জন ভ্যাকসিন না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিভাগের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় ৭২ হাজার দুই জন নিবন্ধন করে ৬১ হাজার ৭৯০ জন প্রথম ডোজ পেয়েছেন। জেলায় প্রথম ডোজ পাননি ১০ হাজার ২১২ জন। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৫৮ জন দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নিতে এখনো বাকি ৩২ হাজার ৭৩২ জন। পক্ষান্তরে জেলায় টিকা মজুত আছে ১২ হাজার ৮০ ডোজ। সে হিসেবে ২০ হাজার ৬৫২ জনকে দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার জন্য অপেক্ষমান থাকতে হবে।
হবিগঞ্জে ৭২ হাজার ৯৩৯ জন নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৬৮ জনে। প্রথম ডোজের জন্য অপেক্ষমান আরো ১৫ হাজার ২৭১ জন। এ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৩১ হাজার ৬৫৯ জন। জেলায় দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার বাকি ২৬ হাজার নয় জন। বিপরীতে ভ্যাকসিনের ডোজ আছে পাঁচ হাজার ৭৫০ জন। সে হিসেবে ২০ হাজার ২৫৯ জন টিকা নেওয়া থেকে অপেক্ষমান থাকবেন।
মৌলভীবাজারে ৭৮ হাজার ২১৪ জন নিবন্ধন করে ৬৬ হাজার ৯৭৩ জন প্রথম ডোজ পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ পাননি ১১ হাজার ২৪১ জন। এ যাবত দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১২৬ জন। এখনো ২০ হাজার ৮৪৭ জন দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অপেক্ষায়। বিপরীতে ভ্যাকসিনের ৭২০ ডোজ মজুত আছে। সে হিসেবে ২০ হাজার ১২৭ জন দ্বিতীয় নেওয়া থেকে অপেক্ষমান থাকতে হবে।
এদিকে, রোববার (২ মে) সিলেট বিভাগে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন আরো পাঁচ হাজার ৯৪৯ নারী পুরুষ। এর মধ্যে তিন হাজার ৪৮৬ জন পুরুষ ও দুই হাজার ৪৬৩ জন নারী। এছাড়া মহানগর এলাকায় ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে দুই হাজার ১৪০ জনকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের তথ্য মতে, বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় তিন হাজার ৫০৭ জন, সুনামগঞ্জে ৮৬৯ জন, হবিগঞ্জে ৭৮৩ জন এবং মৌলভীবাজারে ৭৯০ জন টিকা নেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এদিন নগরের দুটি টিকা কেন্দ্রর মধ্যে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে এক হাজার ৭৯০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৯৬৭ ও মহিলা ৮২৩ জন। এছাড়া সিলেট পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ৩৫০ জন করোনার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৮৪ ও মহিলা ১৬৬ জন।
তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ডোজে আর মাত্র দু’দিন যেতে পারে। সে সুবাদে টিকা না আসা পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের জন্যও নিবন্ধিতদের অপেক্ষমান থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২১
এনইউ/কেএআর