ঢাকা: অতিরিক্ত দামে কেনা ওষুধ সামগ্রীর বিল আটকে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর ডিপোর (সিএমএসডি) ক্রয় কার্যক্রম (প্রকিউরমেন্ট) প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা শুরু করেছে ঠিকাদার সিন্ডিকেট।
গেল বছর অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান সিএমএসডির পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই চক্রটি এই উদ্যোগ নিয়েছে।
গত বছর করোনা ভাইরাস শুরুর সময় থেকে প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে দেশের সমস্ত হাসপাতালে আরটি-পিসিআর কিট সরবরাহ করেছে। ৭৫০ টাকার কিট তারা প্রথম থেকেই সিএমসিডতে সরবরাহ করছে ৪ হাজার ২০০ টাকা দরে।
ওএমসি দেশের বাজারে এককভাবে ব্যবসা করার জন্য চীনের সেনচুর বায়োটেক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। যাতে বাংলাদেশ থেকে আর কোনো প্রতিষ্ঠান ওই কোম্পানির চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি করতে না পারে। চীনা কোম্পানিটি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ব্যবসা করছে। চাইলেও অন্য কোনো কোম্পানি কিট আমদানি করতে পারছে না।
এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে ওভারসিস মার্কেটিং কোম্পানির (ওএমসি) পরিচালক মো. মারুফ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গেল বছরের ২৩ মে সিএমএসডির পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন আবু হেনা মোরশেদ জামান। সাবেক পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শহিদুল্লাহর সময়ে বেশি দরে কেনা কিটের বিল আটকে দিয়েছেন বর্তমান পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান।
ফলে অনিয়মের মাধ্যমে অস্বাভাবিক অতিরিক্ত দামে কেনা টেস্টিং কিটের বিলের ১০৩ কোটি টাকা পাচ্ছে না ওএমসি। এ কারণে বর্তমান সময়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের স্বচ্ছ ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ওঠে পড়ে লেগেছে ১৩৫ জন ঠিকাদার।
শুধু তাই নয় ওএমসির চেয়ে কম দামে যারা কিট সরবরাহ করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে।
সিএমএসডিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান পরিচালক আসার পর থেকেই প্রত্যেকটি দরপত্রে আগের দরপত্রের চেয়ে কম দামে কার্যাদেশ দেওযা হয়েছে, যাতে সরকারের প্রায় হাজার কোটি সাশ্রয় হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার এখন ঠিকাদার চক্র থেকে বের হয়ে আসতে চাইলেও পারছে না। কারণ দেশে সব আরটি পিসিআর ল্যাবের মেশিন প্রথমেই সরবরাহ করেছে ওএমসি।
সিএমএসডি সূত্রে জানা গেছে, ওএমসির চেয়ে ১৫০ টাকা কমে এক লাখ কিট সরবরাহের কার্যাদেশ পেয়েছে জিএস বায়োটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় কমবে দেড় কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জানতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন সহকারী পরিচালক বলেন, জিএস বায়োটেক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব প্রকার নিয়ম মেনেই ঔষধ প্রশাসনের ছাড়পত্র পেয়েছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে ছাড়পত্র ইস্যু করা হতো না। এমনকি ছাড়পত্র না পেলে জিএস বায়োটেক কিট আমদানি করতে পারতো না।
জানতে চাইলে সিএমএসডির পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়াতে সরকারের টাকা সংরক্ষণ করতে গিয়ে অস্বচ্ছ প্রচারণার শিকার হলে তা সত্যিই দুঃখজনক।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২১
এসই/এমআরএ