ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনার মাত্রাভিত্তিক লকডাউন দেওয়া উচিৎ: ডা. লিয়াকত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
করোনার মাত্রাভিত্তিক লকডাউন দেওয়া উচিৎ: ডা. লিয়াকত

ঢাকা: মহামারি করোনা ভাইরাস রোধে বাস্তবতার নিরিখে এলাকা ও ভাইরাসটির সংক্রমণের মাত্রাভিত্তিক লকডাউন (বিধি নিষেধ) আরোপ করা উচিৎ বলে মনে করেন বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী।

মঙ্গলবার (১ জুন) বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেন।

চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের পর সংক্রমণ ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছিল, তবে সেই আশংকা বাস্তবে রূপ না নিলেও সংক্রমণ এখনও বিপদসীমার উপরেই রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সেটা বিপদসীমার নিচে বলা যায়।

মঙ্গলবার (১ জুন) দেশে ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর আগের দিন (৩১ মে ) সংক্রমণের হার ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৩০ মে সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, ২৯ মে ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, ২৮ মে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ, ২৭ মে ৮ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ২৬ মে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ।   

এমতাবস্থায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং একইসাথে জীবন ও জীবিকার সমন্বয় ঘটাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক বিধি নিষেধ আরোপ করতে মতামত দিচ্ছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।  

বর্তমানে করোনার ভাইরাস সংক্রমণের হার এবং প্রতিরোধ বিষয়ে করনীয় জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ঈদের সময় বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ দুই মিলে সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা, অন্যদিকে লকডাউনের ফলে কিছু বিধিনিষেধ থাকায় তেমন বিস্ফোরণ ঘটেনি। তবে এমন অবস্থা কতদিন থাকবে সেটাও বলা মুশকিল।

এ চিকিৎসা বিজ্ঞানী আরও বলেন, এলাকাভিত্তিক যে লকডাউনের পরামর্শ সেটাই হয়তো উত্তম, কারণ আমাদের বাস্তবতার পরিপেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদে সারা দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন দেওয়া সম্ভব নয়, সেটা সমাধান নয়। আমাদের দেশে এলাকাভিত্তিক সংক্রমণের মাত্রার উপরে নির্ভর করে একেক অঞ্চলে একেক ধরণের বিধি নিষেধের উপর গুরুত্বারোপ করা যেতে পারে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অঞ্চলভিত্তিক গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং স্থানীয় নীতি নির্ধারক ও প্রভাব বিস্তারকারী পক্ষ সমূহকে সম্পৃক্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কারণ আমি বা আপনি যত কথাই বলি তারা আমাদের কথা নাও শুনতে পারে।

করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিকাদানের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দুই বছর ধরে যদি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে টিকা দেওয়া হয়, তাহলে সেভাবে ফলাফল পাওয়া যাবে না। অন্যথায় দেখা যাবে ১ কোটি লোককে টিকা দেওয়া হলো, আবার অন্যদের টিকা দিতে আরও এক বছর চলে গেল। এই সময়ের মধ্যে আবার পূর্বের টিকা দেওয়া লোকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার সময় চলে এলো। আবার টিকা দেওয়ার পর তার শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি কতদিন থাকবে সেটাও এখনও জানা যায়নি। সুতরাং আমাদের পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী টিকা সংগ্রহ করে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকাদান সম্পন্ন করতে হবে, তাহলেই আমরা টিকার সুফল পাবো।  

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
আরকেআর/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।