নাটোর: নাটোরে টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা লকডাউনের পরও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় সদর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে চারজন করোনা আক্রান্ত ও একজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৪ জনে।
রোববার (১১ জুলাই) দুপুরে নাটোরের সিভিল সার্জ ডা. কাজী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নাটোরে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৩৬ জন। সংক্রমণের হার গত দিনের তুলনায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়ে ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। উপসর্গ ও করোনা নিয়ে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি আছেন ৯৭ জন। জেলায় মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ২৮ জন। হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ৬৬৩ জন।
এদিকে নাটোর সদর হাসপাতালে ক্রমেই বাড়ছে রোগীর চাপ। সংক্রমণের সংখ্যা বাড়লেও মানুষের মধ্যে নেই কোনো সচেতনতা। নানা অযুহাতে বাইরে বের হচ্ছেন মানুষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মাঝেও ঠেকানো যাচ্ছে না মানুষের অবাধ চলাচল। গ্রামাঞ্চলের পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকান পাঠ এবং বিভিন্ন ছোট-বড় বাজারগুলোতে দোকান খোলা থাকায় মানুষের আড্ডা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। এছাড়া বিকেল হলেই রেললাইন, রেলস্টেশন কিংবা ফাঁকা সড়কে মানুষের অবাধ চলাচল ও আড্ডা বেড়েছে। ফলে লকডাউন কার্যত কোনো কাজেই আসছে না।
একটি বেসরকারি সংস্থার সূত্র জানায়, জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেশি রয়েছে। কিন্তু সব তথ্য স্বাস্থ্যবিভাগের কাছে পৌঁছায় না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে করোনায় আক্রান্তের হার বেশি হলেও পরীক্ষার অভাবে তা শনাক্ত হচ্ছে না। ফলে অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেলেও তা সরকারি হিসাবের তালিকায় আসছে না। ফলে করোনায় মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারছেন না স্বাস্থ্যবিভাগ।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাবসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে তৎপর আছেন। মানুষকে সচেতন করতে এবং মাস্ক পরিধানে উৎসাহিত করতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করছেন। যাতে মানুষ ঘর থেকে বের না হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২১
আরএ