ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

যশোরে করোনার মধ্যে নতুন বিপদ ডেঙ্গুজ্বর, আক্রান্ত ২০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২১
যশোরে করোনার মধ্যে নতুন বিপদ ডেঙ্গুজ্বর, আক্রান্ত ২০

যশোর: চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় বেড়েছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।  জেলায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ২০ জনকে শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদের মধ্যে গত জুলাই মাসেই শনাক্ত হয়েছে সাত জন রোগী। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে জেলার অভয়নগর ও শার্শা উপজেলায়। এসব রোগী ঢাকা ও স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেশি হলেও এ বছরে জুলাই থেকেই ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগে রয়েছে যশোরবাসী।

এদিকে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও জেলার পৌরসভাগুলো মশক নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে অন্য বছরের তুলনায় এবার মশার উৎপাত বেড়েছে কয়েকগুণ।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের ভয়ের মধ্যে যশোরে নতুন সমস্যা হিসেবে যুক্ত হয়েছে এডিস মশার উৎপাত। মশারি-কয়েলেও নিস্তার পাচ্ছেন না যশোরবাসী। তাই করোনার এমন দুর্যোগের সময় ডেঙ্গুর প্রকোপে আতঙ্কিত মানুষ।  

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর যশোরে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল ৪ হাজার ১০৬ জন। এদের মধ্যে মারা গেছে ছয় জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ সুস্থ রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি। তবে, অন্য বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় ডেঙ্গুরোগী বেশি।  যশোর শহরে ডেঙ্গুরোগী বাড়তে থাকলে করোনারোগীর সঙ্গে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এম এম কলেজ মসজিদ গেট এলাকার এক ছাত্রবাসে বসবাসকারী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মশার উৎপাত এত বেড়েছে যে ঘরে রীতিমতো তাদের গান শুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে মশার উপদ্রব বেশি। পত্র-পত্রিকায় দেখছি দেশে করোনার মধ্যে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগী। পৌরসভা থেকে বিগত বছরগুলোতে মশক নিধন করলেও এবার তা চোখে পড়েনি।  

সাদ্দাম হোসেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। যশোরে এর আগে  প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় এডিস মশার জন্ম ও বংশ বাড়ার কোনো সুযোগ দেওয়া ঠিক হয়নি। আগেভাগেই দায়িত্বপ্রাপ্তদের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে যশোর পৌরসভায় ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হওয়ার কোনো খবর নেই। আমরা দ্রুতই ওয়ার্ডভিত্তিক ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বিষয়ক প্রচারণায় নামবো। একইসঙ্গে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, যশোরে গত জুলাই মাসে বেশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর মধ্যে অভয়নগর ও শার্শা উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বর্তমানে ঢাকাসহ  দেশব্যাপী ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ কারণে শঙ্কা বাড়ছে মানুষের মনে। তবে ডেঙ্গু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সচেতন থাকলে এই রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিসহ যে সভাগুলো হয়ে থাকে, সেখানে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। সপ্তাহে একদিন নিজ বাড়ি ও অফিস আঙ্গিনা পরিষ্কার করার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২১
ইউজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।