ভোলা: ভোলায় শিশুদের ঠাণ্ডা, জ্বর, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে জেলাটিতে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়েছে ৪৪টি শিশু।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুদের রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকালে ভোলা সদর হাসপাতালে নতুন ভর্তি নিউমোনিয়া আক্রান্ত দুইটি শিশুসহ ৪৯ শিশু রোগী চিকিৎসাধীন। যার মধ্যে বেশির ভাগই নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু।
ভোলা হাসপাতাল সূত্র জানায়, শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে ভোলা হাসপাতালে ৯৭টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। যার মধ্যে নিউমোনিয়ায় গত সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ইয়ামিন নামে তিন মাসের একটি শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে শিশু রোগীর চাপ একটু বেশি। গত অক্টোবর মাসে শিশু ওয়ার্ডে মোট ভর্তি হয়ছিল ৭৭৮টি শিশু। যার মধ্যে ১৩৭টি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। চলতি মাসে গত ২৪ দিনেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫৩। যাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
ভোলা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিল ৬২টি শিশু। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একটি শিশুর। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪৯টি শিশু।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের গত ১৭ নভেম্বর সাত, ১৮ নভেম্বর ছয়, ১৯ নভেম্বর ছয়, ২০ নভেম্বর আট, ২১ নভেম্বর আট, ২২ নভেম্বর তিন, ২৩ নভেম্বর দুই এবং ২৪ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত তিনটি শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে।
এদিকে, শিশু ওয়োর্ডে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। ২৫টি বেড ও সাতটি কেবিনে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪৯টি শিশু। এতে গাদাগাদি অবস্থায় চলছে চিকিৎসাসেবা। একটি বেড দুইটি কিংবা তার বেশি শিশুকেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
ভোলা সদরের পশ্চিম ইলিশা থেকে আসা একটি শিশুর মা কুলসুম বাংলানিউজকে বলেন, শয্যা সংকটের কারণে একটি বেডে দুইটি শিশুকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে একটু অসুবিধা হলেও কিছুই করার নেই। তাই বাধ্য হয়ে এমন পরিস্থিতিতেই আমরা চিকিৎসাসেবা নিচ্ছি।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স (ইনচার্জ) রোজিনা ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শীতজনিত রোগে শিশু রোগীর চাপ একটু বেশি হাসপাতালে। তবে আমরা সাধ্যমতো পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুদের শীতজনিত রোগের প্রকোপ একটু বেড়েছে। শিশুদের অভিভাবকদের একটু বেশি সতর্ক থাকবে হবে। শিশুদের যাতে ঠাণ্ডা বাতাস না লাগে, সেদিকে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে।
সব হাসপাতালে শিশু রোগীদের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এসআরএস