ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেশে গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের ঝুঁকি নির্ণয় পরীক্ষা চালু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
দেশে গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের ঝুঁকি নির্ণয় পরীক্ষা চালু

ঢাকা: অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের ভ্রুণের ক্রোমোজোম বা জিনগত ত্রুটি নির্ণয় পরীক্ষা চালু করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগ, রেডিওলজি ইমেজিং বিভাগ এবং ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের সমন্বয়ে এই পরীক্ষা চালু করা হয়েছে।

এখন থেকে দেশেই বিএসএমএমইউতে মায়ের গর্ভে ১১ হতে ১৪ সপ্তাহে ভ্রুণ ডাউন সিনড্রোম ও অন্যান্য ক্রোমোজোমাল ত্রুটিতে আক্রান্ত কি না তার ঝুঁকি নির্ণয় পরীক্ষা করা যাবে। পরীক্ষায় উচ্চ ঝুঁকি পাওয়া গেলে তা আরেকটি পরীক্ষার মাধ্যমে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।  

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গর্ভবতী মায়েদের যদি আমরা দ্রুত স্ক্রিনিং করতে পারি, তাহলে ঝুঁকি কমানো কমানো সম্ভব। অটিস্টিক শিশু বা ডাউন সিন্ড্রোম রোগী রোধে আমাদের বিশেষজ্ঞরা মত দিয়ে থাকেন, বেশী বয়সে বিয়ে করা ঠিক হবে না। উপযুক্ত বয়সে বিয়ে হওয়া দরকার। ত্রিশ বছর বয়সে বা পরে যদি বিয়ে হয়, ৯০০ জন মায়ের মধ্যে একজন ডাউন শিশু জন্ম নেবে। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সের পর ঝুঁকি দ্রুত বাড়তে থাকে। ৩৫ বছর বয়সের প্রতি ৩৫০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে একজনের এবং ৪০ বছর বয়সের প্রতি ১০০ জন মায়ের একজনের ডাউন শিশু হতে পারে। শিশুর জন্মের আগেই যদি আমরা ডাউন শিশু স্ক্রিনিং করতে পারি তাহলে বাবা-মাসহ সমাজের কিছু মানুষকে কষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে পারব।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, ডাউন সিনড্রোমের কারণ, প্রতিরোধ ও মায়ের গর্ভে ডাউন সিনড্রোম নির্ণয় ও ডাউন শিশুদের বিশেষ যত্মের ব্যপারে আমরা সচেতনতা তৈরী করার চেষ্টা করছি। সচেতনতার মাধ্যমে মেধাদীপ্ত শিশুর জন্ম নিশ্চিত করে সুখী পরিবার গড়াই আমাদের লক্ষ্য।

অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, দেশে প্রায় আড়াই লাখ ডাউন শিশু আছে। ডাউন শিশু হলো এক ধরণের ক্রোমাজোমাল এবনরমালিটি। ডাউন সিন্ড্রোম সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় দিন দিন দেশে ডাউন শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। বেশীরভাগ ডাউন শিশুর জন্মগত হার্টের সমস্যা থাকে বলে অনেক শিশু জন্মের পর মারা যায়, যা নবজাতকের মৃত্যু হার বাড়ায়। আর যারা বেঁচে থাকে তারা মানসিক প্রতিবন্ধী হিসেবে সংসার ও দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পাল।  

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ব্যাসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শিরিন তরপদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম।

প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল দেশে ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের সংখ্যা ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
আরকেআর/এসএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।