ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

স্পাইন সার্জারিতে এগিয়ে ভারতের ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল এবং ডা. বিশাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২২
স্পাইন সার্জারিতে এগিয়ে ভারতের ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল এবং ডা. বিশাল ডা. বিশাল পেশাতেওয়ার

ঢাকা: সম্প্রতি ঢাকা এসেছিলেন ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল রিসার্স ইনস্টিটিউটের স্পাইন সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. বিশাল পেশাতেওয়ার। ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি কথা  বলেছেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সঙ্গে।

এ সময় স্পাইন সার্জারি নিয়ে তিনি বলেন, ট্রমা এবং দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত রোগীরাই মূলত বেশি স্পাইন সমস্যায় ভোগেন। দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা অভ্যস্ত নন, হঠাৎ করে এমন কোনো কাজ করলে হাঁড়ের ওপর চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে ঠিক তখন থেকেই হাঁড়ে ক্ষয়জনিত সমস্যার সূত্রপাত হয়। আস্তে আস্তে তা বড় রকমের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এগুলো সারিয়ে তোলার জন্যই স্পাইন সার্জারি। হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়া বা জন্মগতভাবে, কিংবা বংশগতভাবেও কারো কারো এই সমস্যা হয়। এসব সমস্যা নিয়েই দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছি।

স্পাইনাল সমস্যায় অনেকেই অস্ত্রপচার করতে ভয় পান, আবার সেরে উঠতেও অনেক দিন সময় লাগে। এ বিষয়ে কথা হলে ডা. বিশাল বলেন, স্পাইন সার্জারি নিয়ে আমরা যেটা জানি, তা হলো অনেক দিন লাগে স্বাভাবিক হতে। তবে আমরা ভারতে এটা করি খুবই ছোট করে। এতটাই ছোট সার্জারি করা হয় যে, অস্ত্রপচারের দিন থেকেই রোগী হাঁটতে পারেন এবং এক মাসের ভেতরই তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। এছাড়া কেউ চাইলে ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যেই মোটরসাইকেলও চালাতে পারবেন। শুধুমাত্র ছোট পরিসরে এমন সার্জারির কারণেই তা সম্ভব হচ্ছে।

নিজের হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন মুম্বাইয়ে কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে রোবটিক সার্জারি করি। এটি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এছাড়া সেবার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই। অনেক রোগী হাসপাতালে থাকতে চান না, সেজন্য আমরা হাসপাতালের বাইরেও তাদের থাকার ব্যবস্থা রেখেছি। এতে জটিলতা কমে যায়। এছাড়া রি-সার্জারির প্রয়োজন হলে আমরা সেটিও করি রোগীর সুস্থতার জন্য।

ডা. বিশাল পেশাতেওয়ার বলেন, হঠাৎ করে অভ্যস্ত নন এমন কোনো কাজ করলে হাঁড়ের ওপর চাপের সৃষ্টি হয় এবং ঠিক তখন থেকেই হাঁড় ক্ষয়জনিত সমস্যার সূত্রপাত হয়। ধীরে ধীরে তা বড় রকমের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপর একটা সময় কোমরে ব্যাথা হয়। আমরা সবসময় চিন্তা করি যে আমাদের কোমরে ব্যাথা হলে কার কাছে যাব? নিউরো সার্জারির কাছে? স্পাইন সার্জারির কাছে? নাকি অর্থোপেডিক্স সার্জারির কাছে? সবাই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যান। তবে এই বিষয়ে আমার মত হলো- সঠিকভাবে ডাক্তার দেখিয়ে যেটা প্রযোজ্য, সেই বিষয়ে যিনি অভিজ্ঞ, সেই ডাক্তারের কাছেই যাওয়া।

এই রোগের নিরাময় এবং সতর্কতা সম্পর্কে তিনি বলেন, শুধু ওষুধ সেবনে স্পাইনাল সমস্যা থেকে নিরায়মের সম্ভাবনা অনেক কম। ওষুধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে এ রোগ থেকে মোটামুটি নিরাময় পাওয়া সম্ভব। কারো কিডনি ও গ্যাস্টিকজনিত সমস্যা থাকলে ব্যাথানাশক ওষুধ খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক এবং প্রবীণ জনগোষ্ঠী, যারা ভারী কাজে অভ্যস্ত নন; গর্ভবতীসহ অন্যান্য নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ২০-৪০ এর মধ্যে, তারাই মূলত এসব রোগে বেশি আক্রান্ত থাকেন। ৪০ ঊর্ধ্ব বেশিরভাগ মানুষেরই হাঁড় ক্ষয়জনিত সমস্যা দেখা দেয় ধীরে ধীরে। এসব রোগীর সুস্থ হওয়ার মূলমন্ত্র হলো ব্যায়াম, ফিজিও থেরাপি, আল্ট্রা সাউন্ড থেরাপি এবং অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করে সতর্কভাবে নিয়ম মাফিক চলাফেরা করা।

মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের অ্যাপয়েনমেন্ট এবং সেবা সম্পর্কে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগের মুখ্য ব্যবস্থাপক দীপক চাওলার সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে কোনো রোগি আসতে চাইলে প্রথমে আমাদের ই-মেইল করতে হবে। সেখানে তার রিপোর্টগুলো পাঠাতে হবে। এরপর আমরা সেগুলো আমাদের ডিপার্টমেন্টের ডাক্তারদের কাছে পাঠাব। সেখান থেকে কনফার্ম করে, ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আমরাই আবার রোগীকে তা জানিয়ে দেব। ফলে হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার খোঁজার কোনো দরকার নেই, ই-মেইলের মাধ্যমেই যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়া বাঙালিদের জন্য আমাদের হাসপাতালে অনেক বাঙালি সহকর্মীও আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২২
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।