ঢাকা: সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর হলেও এবারের কোরবানির ঈদ মৌসুমের প্রায় পুরো চামড়াই প্রক্রিয়াজাত হবে হাজারীবাগে। চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) থেকেই লবণ দেওয়া চামড়া হাজারীবাগে ঢুকতে শুরু করেছে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এপেক্সসহ বিভিন্ন ট্যানারিতে চামড়ার ট্রাক ঢুকতে দেখা গেছে। ট্যানারি মালিক ছাড়াও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনে কারখানা ভাড়া নিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু করেছেন।
কেনা চামড়ার অপেক্ষায় রপ্তানিকারক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও বসে রয়েছেন হাজারীবাগের ঢাকা ট্যানারি মোড়সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায়। তবে এখনও জোরেসোরে চামড়া কেনার কোনো তাগাদা দেখা যায়নি। যদিও সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে রাসায়নিক ও লবণের দোকানগুলো।
দুপুরে ঢাকা ট্যানারি মোড়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাতে গোণা দু’একটি ছাড়া সব ট্যানারি মালিকরাই হাজারীবাগে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করবেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন এখনও চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার সব ব্যবস্থা চালু হয়নি সাভারে। তাছাড়া যারা সাভারে শিল্প স্থানান্তর করেছেন তারাও সব ধরনের সুবিধা সৃষ্টি করতে না পারায় হাজারীবাগেই চামড়া প্রস্তুত করবেন।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শাহ আলম বলেন, সাভারে হোয়াইট ব্লু করার উপযুক্ত করতে প্রায় এক বছর সময় লাগবে। ফিনিশ লেদার করতে সময় লাগবে তিন বছর। এ অবস্থায় এখন ঈদ মৌসুমের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে শিল্প বাঁচাতে হলে হাজারীবাড়েই চামড়া প্রস্তুত করতে হবে।
তিনি জানান, এপেক্স, আজমেরি, রিয়ালেন্সও এখানে লবণ দেওয়া চামড়া কিনছে। ঈদ মৌসুমের পর দেশের ২০ থেকে ৩০টি ট্যানারি হয়তো কম সময়ে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে পারবে। আর বাকিরা দ্রুত সময়ে ট্যানারি সরাতে পারবে না।
শাহ আলম বলেন, রুমা ট্যানারি, এশিয়া ট্যানারি, নিষাদ ট্যানারিসহ অনেক ট্যানারি বন্ধ রয়েছে। তারা কোনো চামড়া কিরছে না। অনেকে দেউলিয়া হয়ে রয়েছেন ব্যাংকের কাছে। এ অবস্থায় তারাও ট্যানারি সরাতে পারছে না। আর অনেক ট্যানারি মালিক কারখানা ভাড়া দিচ্ছে কমার্শিয়াল এক্সপোর্টারদের কাছে। প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ কমার্শিয়াল এক্সপোর্টার কারখানা ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন।
হাজারীবাগের কমার্শিয়াল এক্সপোর্টার মামুনুর রহমান বলেন, ট্যানারি স্থানান্তর নিয়ে চামড়া শিল্পে যে অস্থিরতা, তা দূর করতে সরকারকে নতুন পলিসি নিতে হবে। তা না হলে বিদেশি বাজার হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কেমিকেল ব্যবসায়ীদের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত ট্যানারি সরাতে সরকারের নতুন পলিসি নেওয়াই জরুরি মনে করেন এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর, ২০১৬
এসএমএ/এমজেএফ/