ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিল্প

বেতন না দিয়ে লাপাত্তা ট্যানারি মালিকরা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:১৪, এপ্রিল ৯, ২০১৭
বেতন না দিয়ে লাপাত্তা ট্যানারি মালিকরা!  মালিকের অপেক্ষায় হাজারীবাগের ট্যানারি শ্রমিকরা। ছবি ও ভিডিও: ঊর্মি

ঢাকা: সকাল ১০টা। ইউটিলিটি সার্ভিস কেটে দেওয়ায় কাজ বন্ধ হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোতে। পাওয়া যাচ্ছে না মালিকপক্ষের কাউকে। ফলে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। আর এ নিয়ে কোনো ধরনের নির্দেশনা না থাকায় অনিশ্চয়তায় পড়া শ্রমিকরা ক্রমেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন।

হাজারীবাগ ট্যানারি মোড়ের পাশেই এলআইবি কারখানা। পড়ে আছে সব মেশিন।

পানির লাইন কাটা। বিচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন। বন্ধ কাজ। মার্চ মাসের বেতনের জন্য আসছেন শ্রমিকরা। কিন্তু মালিকপক্ষের কেউ নেই। শুধু এলআইবি নয়, হাজারীবাগের সব কারখানার চিত্র একই।  
 
‘মার্চ মাস পুরাডাই কাজ করছি। এই মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত দিনে ১২ ঘণ্টা কইরা কাজ করছি। কিন্তু মালিক কোনো বেতন না দিয়াই উধাও হইয়া গেছে। কবে বেতন দিবো সে কথা কয় নাই ম্যানেজার। ঘর ভাড়া দিমু ক্যামনে। বাড়িওয়ালারাতো আমাগোই ধইরা মারবো। ’ বলছিলেন এলআইবি ট্যানারির শ্রমিক আছমা বেগম।
 
সেবিন অপারেটর মো. শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, কারখানায় তো এক মাস পুরা কাজ চলছে। সব শিপমেন্ট হইছে। মালিকরা পেমেন্টও পাইছে। কিন্তু আমাদের মার্চ মাসের বেতন মালিকরা দিচ্ছে না। শুধু তাই না, কারখানা বন্ধ কইরা দিতে হইব দেইখা মালিক পক্ষের কেউ কারখানায়ই আসে নাই।
 বন্ধ ট্যানারির গেটে অসহায় শ্রমিক।  ছবি: ঊর্মি
মিল্লাত ট্যানারির শ্রমিকরা বলেন, সরকার নাকি আমাদের ঘর বানানোর জন্য সাভারে মালিকগো জায়গা দিছে। কিন্তু সাভারে নিয়ে যাওয়া হবে কিনা সে বিষয়েও মালিকরা আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করছেন না। আমরা যাবো কোথায়। কারখানা বন্ধ থাকলে মালিকদের কিছু যায় আসে না, কিন্তু আমরাতো না খায়া মরমু।
 
পরবর্তীতে কি করব তাতো অনেক পরের কথা, এ মাসে চলমু ক্যামনে আমরা তাই জানিনা বলে আক্ষেপ প্রগতি ট্যানারির শ্রমিকদের।

তারা জানান, গত মাসের বেতন মালিকরা দিবো বইলা মনে হইতাছে না। তারা তো কারখানায়ই আসেন না গত ১৫ দিন ধরে। কিন্তু আমরা তো কাজ ঠিকই করছি।
 
হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো বন্ধ করে সেখানকার গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পরিবেশ অধিদফতরকে ৩০ মার্চ  নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। ১০ এপ্রিলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আদালতে এর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে হবে। আর তাই ৮ এপ্রিল হাজারীবাগের প্রায় সব কারখানার  বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
 
কিন্তু মালিক পক্ষ লাপাত্তা হওয়ায় হাজারীবাগের শ’দ‍ুই কারখানায় প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক বেতন নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনায় পড়েছেন।    

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।