একইসঙ্গে আসন্ন কোরবানির চামড়া যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিল্প, বাণিজ্য, পরিবেশ ও বন, ধর্ম, তথ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, অর্থবিভাগ, ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং চামড়া শিল্পসংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটি সুপারিশ পেশ করবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রথম সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ইউরোপের বাজারে দেশীয় চামড়াজাত পণ্য রফতানির লক্ষ্যে ট্যানারিগুলোকে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেশন অর্জন করতে হবে। এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাভার ট্যানারি শিল্পনগরীতে নির্মিত সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (সিইটিপি) স্থাপন করা হয়েছে। সার্টিফিকেশন অর্জনে অন্যান্য শর্তপূরণে ট্যানারি মালিকদের আরও সক্রিয় হতে হবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন, চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা আড়তদারদের কাছ থেকে যথাসময়ে কোরবানির চামড়া না কিনলে সেগুলো সরকারি উদ্যোগে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন গুদামে ন্যূনতম তিন মাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া চামড়া সংরক্ষণের জন্য কওমি মাদ্রাসাগুলোকে প্রস্তুত রাখা হবে। এজন্য তাদের ভর্তুকি দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে উপজেলা পর্যায়ে ন্যূনতম দুইজন ডিলারকে চামড়া সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য প্রয়োজনে তাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশীয় চামড়া শিল্পের স্বার্থে ট্যানারিগুলোকে রক্ষা করতে হবে। কোরবানির চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য তৃণমূলের চামড়া ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করতে হবে। সবার স্বার্থ রক্ষায় যা করণীয় সরকার সেটিই করবে।
সভায় কোরবানির সময় চামড়া সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে সব অংশীজনদের পারস্পরিক আস্থা বজায় রেখে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল হালিম, অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ ও মোহাম্মদ মফিজুল হক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাখাওয়াত হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) পরিচালক ড. মোহা. আব্দুস ছালাম, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সচিব মো. নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিচালক মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন (বিডা) কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. রিয়াজুল হক, বিল্ডের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট কানিজ ফাতেমা, সাভারে অবস্থিত ঢাকা চামড়া শিল্প নগরীর প্রকল্প পরিচালক জিতেন্দ্র নাথ পাল উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
জিসিজি/ওএইচ/