গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা বিপদজনক। তারপরও অনেকেই গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলেন।
বিশ্বে প্রতি বছর ৬ হাজার মানুষ ফোনে কথা বলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান। জরিপে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। মানুষকে যেন নিষিদ্ধ জিনিসই বেশি টানে। মৃত্যুকেও এখন অনেকে তোয়াক্কা করে না। একটি ফোন কিংবা একটি মেসেজে তার কাছে জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বের করার চেষ্টা চলছে। তেমনই একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গনে। বিভিন্ন ধরনের অ্যাপলিকেশন তৈরি করা হচ্ছে। যে অ্যাপলিকেশনগুলো গাড়ি চালানোর সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
এটিটি ডটকম:
ড্রাইভমোড এ অ্যাপ স্মার্টফোনে ইনস্টল করা থাকলে সে নিজ উদ্যোগে সব মেসেজ এবং ফোনগুলোকে গ্রহণ করে চুপ মেরে বসে থাকবে। যিনি মেসেজ করেছেন অথবা ফোন করেছেন তাকে বলে দেবে, ব্যবহারকারী এখন গাড়ি চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে যতক্ষণ এ অ্যাপ সক্রিয় থাকবে ততক্ষণ ব্যবহারকারীর ফোনের টাচপ্যাডকে লক করে রাখবে। একান্ত প্রয়োজন হলে গাড়ি থামাতে বাধ্য হবে। আগ্রহীরা (http://www.att.com/gen/press-room?pid=2964) এ ঠিকানায় অ্যাপটি ডাইনলোড করতে পারবেন।
ড্রাইভ সেফলি:
এ অ্যাপ মেসেজ, ফোন এমনকি ইমেইলকে ব্লক করবে না। সে ব্যবহারকারীকে মেসেজ বা ইমেইল জোরে জোরে পড়ে শোনাবে। এমনকি ব্যবহারকারী উত্তর দিতে চাইলে সেটাও সম্ভব। ব্যবহারকারী মুখে উত্তর দিলে সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিখে জবাব পাঠিয়ে দেবে। আগ্রহীরা (http://www.drivesafe.ly) এ ঠিকানায় অ্যাপটি ডাইনলোড করতে পারবেন।
টেক্সটিকিউশন ডটকম:
ব্যবহারকারীর গাড়ির গতির ওপর এ অ্যাপ কাজ করবে। গাড়ি যদি ঘণ্টায় ১০ মাইল বেগে ছুটে, তবে এ অ্যাপ ব্যবহারকারীর মোবাইলের মেসেজ অপশন, ইনকামিং কল এমনকি ইমেইল আসাও বন্ধ করে দেবে। যখনই ব্যবহারকারীর গাড়ির গতি কমে আসবে ঠিক তখনই তার কাজ শেষ। আগ্রহীরা (http://www.textecution.com) এ ঠিকানায় অ্যাপটি ডাইনলোড করতে পারবেন।
ড্রাইভক্রাইব ডটকম:
এ অ্যাপে মজার খেলাও বলা যেতে পারে। ব্যবহারকারীর গাড়ি চালানোর দক্ষতার ওপর নম্বর দেবে। এ অ্যাপটি হিসাব করে দেখবে, ব্যবহারকারী কত গতিতে গাড়ি চালিয়েছে, ঠিকমত ট্রাফিক সিগনাল মেনেছে কি না, ফোন কিংবা ইমেইল আসলে সেটা বের করে দেখার চেষ্টা করেছে কি না। এ বিষয়গুলো দেখে গাড়ির চালককে নম্বর দেবে। যদি ব্যবহারকারী নিয়ম মেনে গাড়ি চালান তবে তার জন্য আছে বিশেষ পুরস্কার। এমনকি ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট অ্যাপস্টোর থেকে কমদামে অ্যাপ ক্রয় করারও সুযোগ থাকছে। আগ্রহীরা (drivescribe.com) এ ঠিকানায় অ্যাপটি ডাইনলোড করতে পারবেন।
তথ্যপ্রযুক্তি মানুষকে আর কতটুকুই বা সচেতন করতে পারে। দিতে পারে সঠিক দিকনির্দেশনা মেনে চলার ইঙ্গিত। যদি মানুষ নিজের ভালো নিজে না বোঝে তাহলে তো আর বিশেষ কিছু করার থাকে না। মানুষের তৈরি প্রযুক্তি মানুষকেই সচেতন করতে সক্ষম এটা বিবেচনায় না এনে গাড়ি চালানোর সময় সচেতন থাকাটাই উত্তম।
বাংলাদেশ সময় ২১৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর