এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সফটওয়্যার ও সেবা খাতের ট্যাক্স হলিডে ২০১৩ জুন থেকে ২০১৫ জুন অবধি বাড়ানো হয়েছে। ফলে এ খাত প্রবৃদ্ধির পথে আরও দৃঢ়ভাবে এগোতে পারবে।
এবারের বাজেটে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ২২০ কোটি টাকা থেকে ৬৩৩ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে এ মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তোলার কাজটি ধীরগতি ও ভিন্নধর্মী করে দিয়েছে এবং আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যেখানে সরকার স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে সেখানে কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তোলায় সরকারের অনীহা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
আইসিটি নীতিমালা অনুসারে সরকারের ৭০০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন তহবিল গঠন করার কথা। এটি এখনও সরকার গঠন করেনি। এদিকে অর্থমন্ত্রী ২০১৪ সালের মধ্যেই ই-গভর্ন্যান্স চালু করার কথা বলেছেন। কিন্তু এ কাজটি এ সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়ন হতে পারত।
জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২০২০ সালে ২.৬ ভাগ হবে। এমনটাই আশা করছেন বিশ্লেষকেরা। অর্থমন্ত্রী আইসিটির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিভিন্ন বিষয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন সেগুলো এ খাতের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক।
অর্থমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে একটি আলাদা পুস্তিকা প্রকাশ করে সরকারের কাছে এ খাতের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ডিজিটাল ক্যামেরা, ওয়েবক্যাম, সার্ভার র্যাক, ফাইবার কেবল, সিম কার্ড, মেমোরি কার্ড, ইঙ্ক, রিবন এবং স্মার্ট কার্ডের কর কমিয়েছেন।
তবে বড় আকারের মনিটর (২৭ ইঞ্চি পর্যন্ত), মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ডিজিটাল বোর্ড ইত্যাদির কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বিসিএস। বাজেটে এসব বিষয়ে সরকার ইতিবাচক সাড়া না দেওয়ায় এ খাতকে সংকটে পড়তে পারে।
বিশেষ করে ডিজিটাল ক্লাশরুম গড়ে তোলায় বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসার পথ এতে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। বাজেটে শুধু ১৯ ইঞ্চির মনিটরের শুল্ক শূন্য করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এ আকারের মনিটর এখন তৈরিই হয় না।
ফলে ডেস্কটপ পিসির সব মনিটরের দাম বাড়বে। এতে কম্পিউটার প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য অগ্রিম ট্রেড ভ্যাট, টার্ন অভার ট্যাক্স, খুচরা ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর সম্পর্কে যেসব প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল তা বাজেট বিবেচনায় আসেনি।
এক্ষেত্রে অগ্রিম ট্রেড ভ্যাটকেই চূড়ান্ত ভ্যাট হিসেবে বিবেচনা করা, অগ্রিম আয়কর শতকরা ৩ ভাগে নামিয়ে আনা, টার্ন ওভার ট্যাক্স মওকুফ করা ও খুচরা স্তরে দোকান প্রতি ভ্যাট ৪,২০০ টাকা রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী ডিজিটাল ক্লাশরুম গড়ে তোলার সময়সীমা ২০১৫ থেকে ২০১৮ অবধি পিছিয়ে দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়াও ইন্টারনেটের ওপর থেকে শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজেও মনে করেন, এমন উচ্চহারে ভ্যাট আরোপ করা মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়। তিনি ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথড ও ব্যবহার ব্যয় কমানোর কথা বললেও বাজেট প্রস্তাবে ভ্যাট প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ নেই। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন সরকার বাজেট পাশ করার আগে যৌক্তিক দাবিগুলো আবার বিবেচনা করবেন।
বাংলাদেশ সময় ১৬১৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর