ঢাকা: সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং দায়বদ্ধতা প্রসঙ্গে পেশাদারিত্ব এবং দায়বদ্ধতাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘গণমাধ্যম: স্বাধীনতা ও দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক গণমাধ্যম সংলাপে অন্যান্য বক্তার সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি এ কথা বলেন।
জার্নালিজম অ্যান্ড পিস ফাউন্ডেশন (জেপিএফ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তোয়াব খান বলেন, “একজন সাংবাদিক তার বিবেক, সমাজ এবং রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ। রাষ্ট্রের পেছনে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত রয়েছে তা ভুলে না গিয়ে এবং সংবিধান মেনে চললেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় নতুন কোনো নীতিমালা তৈরির প্রয়োজন নেই। ”
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি ইনডিপেন্ডেন্টের সম্পাদক মাহবুবুল আলম বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে- তা আগে ছিল না। আজ কেবল প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ওপর মানুষ নির্ভরশীল নয়।
অনলাইন মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। ধীরে ধীরে সবাই অনলাইন মিডিয়ার দিকে চলে যাবে। কারণ অনলাইন মিডিয়াতে তাৎক্ষণিক সংবাদ পাওয়া যায়। দ্রুত সংবাদ প্রচার করতে গিযে কখনও কখনও নিয়ম নীতি ভঙ্গ হতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা তৈরি না করে দেশের প্রচলিত আইনের প্রয়োগ থাকলেই দায়বদ্ধতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হতে পারে। ”
দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, “কারও স্বাধীনতাই শর্তহীন নয়- এই বিষয়টি স্বীকার করলেই সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না। বর্তমানে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম অন্যান্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে যে কারণে সরকার, বিরোধী দল এবং অন্যান্য দলগুলো সংবাদ মাধ্যমকে ভয় পাচ্ছে। ”
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, “যে কোনো দল- ক্ষমতায় গেলে তারা মনে করেন গণমাধ্যম তার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। যে কারণে তারা সাংবাদিকদের বিভাজন করেন। সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা থেকে বিচ্যুত করেন। সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা আত্মকেন্দ্রীক না হলে নীতিমালা তৈরি করে তা সৃষ্টি করা যায় না। ”
দৈনিক সংবাদের কার্যনির্বাহী সম্পাদক মনিরুজ্জামান বলেন, “বর্তমানে সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা রয়েছে দলীয়, রাজনৈতিক এবং মালিকের কাছে। যেখানে দায়বদ্ধতা থাকার কথা ছিল সেখানে নেই। এসব দায়বদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। ”
দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক শাহীন রেজা নূর বলেন, “সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব ভূ-লুণ্ঠিত হওয়ার পেছনে সাংবাদিক নেতাদেরও কিছু ভুল ছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। ”
আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক হারুন হাবিবের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’র প্রধান সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, এটিএন নিউজের প্রভাস আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, এজেডএম শফিউল আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৩
এটি/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর, এসএস