দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশই এখনও ডিজিটাল বৈষম্যের আওতাভুক্ত। শুধু ইন্টারনেটকে সহজলভ্য আর সর্বজনীন করতে না পারায় এ বৈষম্য বিশ্বের বিপুল জনগোষ্ঠীকে তথ্য শক্তি থেকে পিছিয়ে রেখেছে।
ইন্টারনেট বিভাজনকে পাশ কাটিয়ে নাগরিক সেবায় তাই ভারতে পরীক্ষামূলকভাবে শর্ট মেসেজ সার্ভিস (এসএমএস) দিয়েই ট্রেনের টিকিট কাটার ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
আসছে ১ জুলাই থেকে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম করপোরেশন (আইআরসিটিসি) পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ সেবা চালু করবে। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।
ইন্টারনেটহীন বিপুল এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল নাগরিক সেবা দিতেই ভারতের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শুধু এসএমএস নয়, ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) এবং আনস্ট্রাকচারড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডেটা (ইউএসএসডি) সিস্টেমেও এ সেবা পাওয়া যাবে।
ট্রেনের টিকিট বিকিকিনি ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন, সহজলভ্যতা ছাড়াও গ্রাহকবান্ধব এবং প্রকৃতিবান্ধব নাগরিক সেবাও এ প্রকল্পে অন্যতম বিশেষ দিক। এমনটাই জানিয়েছেন প্রকল্প উন্নয়করা।
দেশের প্রতিটি মোবাইল ফোন গ্রাহককে যে কোনো সময়, দেশের যে কোনো স্থান থেকে ট্রেনের টিকিট নিশ্চিত করতেই এ পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভারত সরকার। এ পদ্ধতির সফল প্রয়োগে ট্রেনের যাত্রীরা ভোগান্তিহীন ফ্রি টিকিট কাটার দারুণ এক নাগরিক সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
একটি সুনির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে টেক্সট মেসেজ করেই ট্রেনের টিকিট বুকিং, পেমেন্ট এবং বাতিল সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। এ জন্য মোবাইল বার্তার মাধ্যমে আইআরসিটিসি সেবায় গ্রাহককে মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধিত হতে হবে। আর টিকিটের মূল্য পরিশোধে গ্রাহক ওয়ান’স ব্যাংক (পাসওয়ার্ড) পদ্ধতি ব্যবহার করবেন।
এখন তাৎক্ষণিক টিকিট কাটতে ট্রেনের নম্বর, গন্তব্য, যাত্রার তারিখ, টিকিট শ্রেণি ছাড়াও যাত্রীর নাম, বয়স এবং প্রয়োজনীয় তথ্য মোবাইল বার্তায় টেক্সট করতে হবে। এ পদ্ধতির প্রথম ধাপেই যাত্রী একটি ট্রানজেকশন আইডি পাবেন। এরপর পেমেন্টের জন্য একটি পাসওয়ার্ড চাওয়া হবে। এটি একটিপাসওয়ার্ডভিত্তিক নিশ্চিত বার্তা। যা যাত্রীর টিকিট মূল্য পরিশোধ করবে।
এ পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি নিশ্চিত করতে যাত্রীর মোবাইলে ফিরতি বার্তা পৌঁছে যাবে। নিবন্ধিত আইডি নম্বরের ভিত্তিতে আইআরসিটিসি এ টিকিটের নিশ্চিত বার্তা পাঠাবে।
এ ছাড়াও কোনো কারণে টিকিট বাতিল করতেও মোবাইল বার্তার সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব। এতে রেলওয়ে গ্রাহক সেবার মান বহুগুন উন্নত হবে। আর বিপরীতে কমবে ভোগান্তি আর রেলস্টেশনে টিকিট কাটার বাড়তি ঝামেলা।
আপাতত এ সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। তবে গ্রাহকের চাহিদা আর টিকিট কাটার এ পদ্ধতি কারিগরি ত্রুটিমুক্ত হলেই বাড়ানো হবে এ সেবার পরিসর।
বাংলাদেশ সময় ২২৪০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৩