ঢাকা: থ্রিজি সেবায় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে সাশ্রয়ী প্যাকেজ হাতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ক্রিস টোবিট।
মঙ্গলবার এয়ারটেলের কর্পোরেট অফিসে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানান।
তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজার হওয়ায় এ মুহূর্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকেন তিনি।
এয়ারটেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সামনের অক্টোবরের মধ্যেই ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রধান অঞ্চলগুলোতে থ্রিজি সেবা চালু হতে যাচ্ছে। আর আগামী নভেম্বরের মধ্যে সিলেটের প্রধান অঞ্চলগুলোতে থ্রিজি সেবা চালু হয়ে যাবে। ডিসেম্বর নাগাদ এই তিন বিভাগের বাদবাকি এলাকাগুলোতে এই সেবা পৌঁছে যাবে।
ক্রিস টোবিট বলেন, মঙ্গলবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে এয়ারটেল অফিসের মধ্যে থ্রিজি সেবা চালু করা হয়েছে, আগামী দিন কয়েকের মধ্যে মধ্যে ঢাকা নগরীতে ৮ থেকে ১০টি বেজ স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ হবে। যেভাবে আমাদের কাজ এগুচ্ছে তাতে আমরা খুবই খুশি।
টেলিযোগাযোগ খাতে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এয়ারটেলের প্রধান নির্বাহী ক্রিস টোবিট জানান, থ্রিজি লাইসেন্স পাওয়ায় তারা পুরোপুরি খুশি। সেরা মূল্যেই স্পেকট্রাম কিনেছেন।
পুরো থ্রিজি নিলাম প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছে বলে মন্তব্য করে টোবিট বলেন, এতে তারা খুশি।
নিলামের পর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্রুততার সঙ্গে কাজ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
ভারতীয় এয়ারটেলের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ১১ বছর ধরে কাজ করা টোবিট বলেন, থ্রিজি সেবা চালু করতে যেসব যন্ত্রপাতি আনতে হবে সেগুলো আনার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে এগুচ্ছে। এরই মধ্যে আমাদের প্রথম শিপমেন্ট কাস্টম থেকে ছাড়পত্র (ক্লিয়ারেন্স) পেয়েছে।
প্রধান নির্বাহী বলেন, এয়ারটেলের প্রতি গ্রাহকদের বাড়তি আশা আমাদের খুবই আনন্দিত করেছে। থ্রিজি পাওয়ায় এয়ারটেলের অতিরিক্ত দায়িত্ব তৈরি হয়েছে। গ্রাহকদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা সব সময়ই সচেষ্ট থেকেছি।
এ প্রসঙ্গে তিনি কিছু তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
টোবিট জানান, ২০১০ সালে টুজি সেবায় দেশব্যাপী এয়ারটেলের কভারেজ এরিয়া ছিল ২৫ শতাংশ। আর বর্তমানে এই কভারেজ এরিয়া ৮০ শতাংশে পৌছেছে। এই সময়কালে ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। যা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। আর থ্রিজি সেবায় যতটা প্রয়োজন তবে ততটাই বিনিয়োগ করা হবে।
থ্রিজি’র জন্য পর্যাপ্ত কনটেন্ট না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এজন্য অধিক কনটেন্ট প্রয়োজন। তবে তা অবশ্যই ভালো কনটেন্ট হতে হবে, হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এক্ষেত্রে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহযোগিতা করবে এয়ারটেল।
টোবিট বলেন, থ্রিজি সেবা চালু হলে নি:সন্দেহে এদেশে অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে। এদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধিও বেড়ে যাবে। থ্রিজি চালু হলে এর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন, ভূমি রেকর্ড তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব। এয়ারটেল সরকারের সঙ্গে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ যৌথভাবে করতে পারে।
তিনি বলেন, সরকার যদি থ্রিজি’র জন্য স্ম্যার্ট ফোন আনতে বিশেষ ছাড় দেয় তাহলে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় মোবাইল সেট কিনতে পারবেন গ্রাহকরা। যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর থ্রিজি’র জন্য ৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম কিনে নেয় এয়ারটেল। এই মেগাহার্টজ থ্রিজি সেবার জন্য যথেষ্ট কিনা জানতে চাইলে ক্রিস টোবিট বলেন, অবশ্যই এটি যথেষ্ট। অন্তত আরো ৩ থেকে ৫ বছর এই মেগাহার্টজ দিয়ে চমৎকার সেবা দেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, ভারতের মুম্বাই, দিল্লীর মতো ঘনবসতিপূর্ণ নগরীতে ৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম দিয়ে থ্রিজি সেবা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম নগরীতে ওই সংখ্যক জনসংখ্যা নেই। তাই ৫ মেগাহার্টজ সেবাই যথেষ্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৩ /আপডেট ১৩২৫ ঘণ্টা
আইএইচ/জেডএম/এডিবি/জেএম