ঢাকা: রূপকথার গল্পে জাদুর পাটি উড়িয়ে নিয়ে যায় গন্তব্যে। কেমন হবে যদি বাস্তবেও এমন হয়?
এই রূপকথার গল্পই বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে।
চালকবিহীন গাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে এভাবেই চমকে দিলো গুগল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ক্যালিফর্নিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিস্ময়কর খবর জানানো হয়।
গুগলের প্রকৌশলী সেবাস্টিন থ্রুন’র অধীনে প্রায় এক বছর যাবৎ চালকবিহীন গাড়ি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বিশেষজ্ঞ দল।
গাড়িটির সহ-উদ্ভাবক সার্জে ব্রিন জানান, প্রায় একশ’ জন নির্মাতা প্রচলিত গাড়ির মডেলের চেয়ে ভিন্ন আকারে এর নিজস্ব মডেলে গাড়িটি নির্মাণে কাজ করছে। যেন যে কোনো ব্যক্তিরই নতুন এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সুবিধা হয়। কেবল ‘স্টপ’ এবং ‘গো’ বোতাম সম্বলিত গাড়িটি ঘণ্টায় ২৫ মাইল যেতে সক্ষম।
গুগলের চালকবিহীন গাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ক্রিস উর্মসন তার ব্লগে লিখেছেন, ‘ভাবুন, দুপুরে মূল শহরে খাবার খেতে গিয়ে আপনাকে পার্কিংয়ের কথা চিন্তা করতে হবে না। গাড়িতে থাকা সেন্সর ব্যবহার করে নিজেই পার্ক হয়ে যাবে গাড়িটি।
নির্মাতারা এমনভাবে গাড়িটি নির্মাণ করেছেন, যেখানে মানুষের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই এটি নিরাপদে চলবে। গাড়িটিতে নিয়ন্ত্রণ হাতল (স্টেয়ারিং), গতিবর্ধক (এক্সেলেরেটর), গতিরোধক (ব্রেক) কিছুই রাখা হয়নি। কারণ গাড়িতে ভ্রমণকারী ব্যক্তির এগুলো কিছুই দরকার হবে না। সফটওয়্যার এবং গাড়িতে থাকা সেন্সরই সব কাজ করে দেবে।
গাড়িতে কেবল একটি ‘স্টপ’-‘গো’ বোতাম এবং চলার পথ দেখার জন্য পর্দা দেওয়া থাকবে। গুগল মানচিত্রের ওপর নির্ভর করে গাড়িটি চলবে।
গাড়িটিতে এত শক্তিশালী সেন্সর দেওয়া হয়েছে যা দুইটি ফুটবল খেলার মাঠের চেয়েও বড় আয়তনে থাকা বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে পারবে, যেটা আবার ব্যস্ত সড়কে চলতে খুবই সাহায্য করবে।
প্রাথমিকভাবে গুগল একশ’ চালকহীন গাড়ি নির্মাণ করে গ্রীষ্মকালের শেষেই পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম অবস্থায় অবশ্য, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা রাখা হবে। সব ঠিকঠাকভাবে চললে আগামী দুই বছরের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি পাইলট প্রোগ্রাম চালানো হবে।
সার্জে ব্রিন বলেন, আমরা জানার চেষ্টা করছি গাড়িতে কী কী থাকলে যাত্রীরা আরামবোধ করবেন।
চালকবিহীন গাড়িতে পাঠকরা কী চান সে প্রশ্নও করেন নিজের ব্লগে।
প্রকল্পের নিরাপত্তার বিষয়ক পরিচালক রন মেডফোর্ড বলেন, গাড়িটিতে যাত্রীর নিরাপত্তাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি চালকদের ভুলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় যে মৃত্যু ঘটে থাকে এ গাড়ি ব্যবহারে তা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অঙ্গরাজ্য ইতোমধ্যে আইনও পাস করিয়েছে গাড়িটির চলাচলের জন্য।
ভিডিও
বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৪