ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে ৩ বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ ২২ জনকে হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৩
মিয়ানমারে ৩ বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ ২২ জনকে হত্যা

মিয়ানমারে গত সপ্তাহে তিন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অন্তত ২২ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার জন্য সামরিক বাহিনীকেই দায়ী করছেন সেনাশাসনের বিরোধীরা।

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির দক্ষিণের শান রাজ্যের পিনলাউং অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ সংঘাতে বেসামরিক কোনো নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, নান নিয়েন্ত গ্রামের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী পৌঁছানোর পর সেখানে কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স- কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা যখন এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে, তখন কিছু গ্রামবাসী মারা যান, অনেকে আহত হন।

কেএনডিএফ-এর মুখপাত্র দাবি করেছেন, তাদের যোদ্ধারা রোববার নান নিয়েন্ত গ্রামে ঢোকার পর একটি বৌদ্ধমন্দিরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায় মরদেহগুলো দেখতে পায়।

কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপ কারেন্নি রেভোল্যুশন ইউনিয়ন- কেআরইউ কিছু ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ করেছে। সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মরদেহগুলোতে শরীর এবং মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, মন্দিরের দেয়ালেও গুলির দাগ রয়েছে।

তবে কোনো পক্ষের দাবিই নিরপক্ষেভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামে পরিচিত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরোধী ছায়া সরকারের সদস্য ড. ইয়ে জাও মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করেছেন৷ তার তথ্যমতে, খুব কাছ থেকে সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মরদেহগুলোর আশেপাশে কোনো সামরিক পোশাক, অস্ত্র বা গুলি পাওয়া যায়নি। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে তারা বেসামরিক নাগরিক।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু সব মরদেহই নান নিয়েন মন্দির চত্বরের মধ্যে পাওয়া গেছে, ফলে ধরে নেওয়া যায় যে এটি একটি বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিও মিন বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার এমন অন্তত চারটি ঘটনা ঘটিয়েছে সামরিক জান্তা।

একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে বেসামরিক জনগণকে টার্গেটে পরিণত করেছে জান্তা সরকার৷ এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।  

তবে বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জান্তা সরকার তাদের এ অভিযানকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন বলে দাবি করেছে।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের তথ্যানুযায়ী, নির্বাচিত সরকারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে অন্তত তিন হাজার ১৩৭ জন মানুষ মারা গেছেন তাদরে হাতে।

জাতিসংঘও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৩
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।