শাসক বদলেছে। কিন্তু সিরিয়ার নাগরিকদের ভাগ্য যেন আরও খারাপ হয়েছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, সিরিয়ার উপকূলীয় প্রদেশগুলোয় পাঁচটি গণহত্যার ঘটে। এসব ঘটনায় ১৬২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বেশির ভাগ নিহতের সংক্ষিপ্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। সংস্থাটির দৃষ্টিতে, এই পদক্ষেপগুলো ‘বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে চলমান আইন লঙ্ঘনের বিপজ্জনক বৃদ্ধি’ চিহ্নিত করে।
গুরুতর যুদ্ধাপরাধের গ্রাফিক ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, সিরিয়ান নিরাপত্তা বাহিনী বেশ কয়েকজন নিরস্ত্র সিরিয়ান নাগরিককে গুলি করে হত্যা করছে। সেসবের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে অপমান করতেও দেখা গেছে।
যেসব স্থানে এমন নৃশংসতা ঘটেছে, এসওএইচআর সেসবের একটি বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে সিরিয়াজুড়ে বাড়তে থাকা সহিংসতার একটি বিস্তারিত বিবরণ আছে। সেখান থেকে তারতুস অঞ্চলে দুটি নৃশংসতার খবর জানা গেছে। সেখানকার বানিয়াস শহরে ৬০ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন নারী এবং ৫ জন শিশু। এসওএইচআর জানিয়েছে যে, তীব্র হামলার মধ্যে গুলি চালিয়ে নিহতদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও ইয়াহমুর অঞ্চলে গ্রাম থেকে পালাতে চাওয়া দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
লাতাকিয়া থেকে চারটি গণহত্যার খবর মিলেছে। সেখানকার জাবলেহ গ্রামাঞ্চলের বেইত আনার দ্বৈর বাবদা এলাকায় ৭ জন বেসামরিক মানুষকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আল-শির গ্রামে ২৪ জন বেসামরিক মানুষকে গণমৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আল-হাফা শহরে ৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি মাথা বা বুকে গুলির আঘাতে মারা গেছে। কারফিস গ্রামের বাড়িঘর লক্ষ্য করে চালানো হামলায় ২২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, হামা গ্রামের সালহাব এলাকায় কর্তৃপক্ষের হাতে আটকের পর শেখ শাবান মনসুর এবং তার ছেলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ৯০ বছর বয়সী আলাউইত শেখের মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এসওএইচআর এমন সব কর্মকাণ্ডকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশেষ তদন্তকারী দল পাঠিয়ে ওইসব ঘটনার তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণ করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মানুষ হত্যার সাথে জড়িত নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য সিরিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি এসওএইচআর আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে যে, এমন মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে দায়মুক্তি ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ আবারও ঘটতে উৎসাহিত করবে, যা আসাদ-পরবর্তী যুগে সিরিয়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৫
এমজে/এমএইচডি