ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি নৃশংসতায় এখন পর্যন্ত ৩৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। চলমান যুদ্ধবিরতি এক তরফাভাবে আকস্মিক ভঙ্গ করে দখলদার বাহিনী এই নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে।
প্রতিনিয়ত হামলা-হত্যায় গাজার পরিস্থিতি একেবারেই ন্যুজ। এই অবস্থায় সেখানকার সব ধরনের খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসা উপকরণ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আহত মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে গাজার চিকিৎসকদের জন্য। গাজার ‘মুখ্য’ হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা এত বেশি, তার নড়বড়ে হাসপাতালে সবাইকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।
মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, আমাদের সব ধরনের উপকরণ, বিশেষ করে চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। ফলে প্রতি মিনিটে, একজন আহত ব্যক্তি মারা যাচ্ছে। গাজা শহর ও উত্তর গাজায় মাত্র চারটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মৌলিক সরঞ্জামের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য নির্দিষ্ট এলাকাগুলোয় পৌঁছানোও ‘অত্যন্ত কঠিন’ ছিল।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৩০ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যাও অনেক। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্লাড ব্যাংকগুলোয় প্রয়োজনীয় মজুদ শেষ। একটি বিবৃতি জারির মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের রক্তদানে আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এদিকে হামলার পাশাপাশি গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি নতুন করে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সরে যেতে বাধ্য করছে।
হামাস বলেছে, ইসরায়েল গাজার অবরুদ্ধ ও নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর বিশ্বাসঘাতকতামূলক হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙেছে। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদও একই অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবেই ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি ভেঙে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রসারিত করার আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি এই সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
এমজে