দ্বিতীয় দিনের মতো দাবানল নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ইসরায়েলের দমকল কর্মীরা। প্রথম দিন আগুনের তীব্রতায় তেল আবিব ও জেরুজালেমকে সংযুক্তকারী একটি প্রধান মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘আরুতজ শেভা’ জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়ার অভিযোগে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
দাবানলের শুরুটা হয়েছিল বুধবার দুপুরের দিকে। গরম, শুষ্ক আবহাওয়া এবং প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি পাইন বন পুড়িয়ে দেয়। আগুনের ধোঁয়ায় জেরুজালেমের আকাশ ধূসর হয়ে ওঠে।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আশপাশের কয়েকটি এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলে সহায়তা পাঠাতে শুরু করেছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে সাহায্যের জন্য তারা অগ্নিনির্বাপণকারী বিমান পাঠাচ্ছে।
ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস সাধারণ জনগণকে পার্ক ও বনাঞ্চলের কাছাকাছি না যেতে এবং বারবিকিউয়ের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের স্বাধীনতা দিবস—সাধারণত এদিন পার্ক ও বনাঞ্চলে পরিবার নিয়ে ভোজের আয়োজন করে মানুষ।
মাগেন ডেভিড অ্যাডম অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, বুধবার অন্তত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ধোঁয়ায় দমবন্ধের কারণে অসুস্থ হয়েছেন। আরও ১০ জনকে ঘটনাস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ১০টি অগ্নিনির্বাপণ বিমান কাজ করছে এবং দিনের বিভিন্ন সময়ে আরও আটটি বিমান যোগ দেবে।
ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, স্পেন, ফ্রান্স ও রোমানিয়া থেকে অগ্নিনির্বাপণ বিমান পাঠানো হচ্ছে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য। উত্তর মেসিডোনিয়া ও সাইপ্রাসসহ আরও কয়েকটি দেশ পানিবাহী বিমান পাঠাচ্ছে।
জেরুজালেম ও তেল আবিবকে সংযুক্তকারী প্রধান মহাসড়কটি খুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই মহাসড়কে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা আগুনে পুড়ে গেছে। পোড়া গাছপালা ও ঝোপঝাড়ের ওপর গোলাপি রঙের আগুন-প্রতিরোধক রাসায়নিক ছড়িয়ে রয়েছে। পুরো এলাকায় আগুনের গন্ধ ও ধোঁয়ার ভারী উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছিল।
২০১০ সালে ইসরায়েলের উত্তরের কারমেল পর্বতে এক বিশাল বনাঞ্চলে দাবানল চার দিন ধরে চলেছিল। সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৪ জন প্রাণ হারান এবং প্রায় ১২ হাজার একর জমিতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরএইচ