যখন একজন পোপ মারা যান অথবা পদত্যাগ করেন, তখন ভ্যাটিকানে কার্ডিনালদের একটি সম্মেলন ডাকা হয়। তারপর কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন পোপ হলেন রবার্ট প্রেভোস্ট। তিনি চতুর্দশ পোপ লিও নামে পরিচিত হবেন। ক্যাথলিক গির্জার ইতিহাসে তিনিই প্রথম কোনো মার্কিন পোপ।
৬৯ বছর বয়সী প্রেভোস্ট যখন সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের বারান্দায় এসে দাঁড়ান, তখন সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জমায়েত হাজারো মানুষের কাছ থেকে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা ও করতালির মাধ্যমে অভিনন্দন পান।
গত ২১ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন পোপ বেছে নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এবার ২৬৭তম পোপ নির্বাচন করলেন কার্ডিনালরা।
সাধারণত কোনো পোপ মারা গেলে অথবা পদত্যাগ করলে নতুন পোপ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়কালে কলেজ অব কার্ডিনালসই গির্জার যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
সিস্টিন চ্যাপেলের ভেতরে অনুষ্ঠিত হয় পোপ নির্বাচনের ভোট। কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে সেখানে কার্ডিনালরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। নতুন পোপ নির্বাচনের এই প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে।
অতীতে এক সপ্তাহ, এমনকি এক মাস সময় ধরেও ভোট চলতে দেখা যায়। ভোট চলাকালে কার্ডিনালদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন, এমন ঘটনারও নজির আছে।
এই সময়ে নতুন পোপ নির্বাচন কতটুকু এগোলো, সেটি বোঝার একমাত্র উপায় হলো ধোঁয়া। নির্বাচন চলাকালে প্রতিবার ভোট শেষে নির্দিষ্ট চুল্লিতে ব্যালট পেপার পুড়িয়ে ফেলা হয়।
ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হলো পোপ নির্বাচন হয়নি। আর সাদা ধোঁয়া দেখার মানে হলো নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
সিস্টিন চ্যাপেলে প্রবেশ করার পর নতুন পোপ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কার্ডিনালদের বাইরে যোগাযোগ করার কোনো অনুমতি নেই।
প্রথম দিন দুপুরে এক দফায় ভোটাভুটি হয়, তবে এরপর প্রতিদিন সর্বোচ্চ চার দফায় ভোট হয়। নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন।
প্রত্যেক কার্ডিনাল একটি সাদা কার্ডে তার পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে ভোট দেন। এরপর তারা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একে একে সারিতে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভোট কার্ড সোনালি রঙের বড় পাত্রে রাখেন।
যদি কনক্লেভের তৃতীয় দিনেও সিদ্ধান্ত না হয়, তবে কার্ডিনালরা একদিনের প্রার্থনার বিরতির সুযোগ নিতে পারেন। এরপর তারা প্রত্যেক সাত দফা ভোটের পর আরেকটি বিরতি নিতে পারেন।
যদি ৩৩ দফার পরও কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তবে দুটি সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থীর মধ্যে একটি রান-অফ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে পোপ নির্বাচিত হতে হলে একজনের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন প্রয়োজন।
আরএইচ