তুরস্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা সশস্ত্র আন্দোলনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংগঠন ভেঙে দেওয়ার এবং অস্ত্র পরিত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)।
এই পদক্ষেপটি তুরস্কের সঙ্গে দীর্ঘকালীন সহিংসতা অবসানে একটি নতুন শান্তি উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ফিরাত নিউজ এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরাকে অনুষ্ঠিত সংগঠনের কংগ্রেসে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসটি গত শুক্রবার শেষ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাগারে বন্দি পিকেকে নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের ‘দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রস্তাবনা’ কংগ্রেসে পাঠ করে শোনানো হয়। ওজালান এর আগেও, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, পিকেকে'কে অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ফিরাতের মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, কুর্দি জনগণের অধিকার দমনে পরিচালিত নীতির বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র লড়াই সফল হয়েছে এবং তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক মিশন’ সম্পন্ন করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১২তম পিকেকে কংগ্রেসে সংগঠনের কাঠামো ভেঙে দেওয়া এবং সশস্ত্র সংগ্রামের পদ্ধতি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ফলে ‘পিকেকে’ নামে পরিচালিত সব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) মুখপাত্র ওমের চেলিক এ বিষয়ে বলেন, যদি নতুন সিদ্ধান্ত পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হয় এবং পিকেকে-র সব শাখা ও অবৈধ কাঠামো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়, তবে এটি একটি যুগান্তকারী মাইলফলক হবে।
প্রসঙ্গত, কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি হল একটি কুর্দি সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন ও গেরিলা গোষ্ঠী। সংগঠনটি মূলত দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক, উত্তর ইরাক এবং উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার পাহাড়ি কুর্দি-অধ্যুষিত অঞ্চলে সক্রিয়।
এই সংগঠনটি ১৯৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর তুরস্কের দিয়ারবাকির প্রদেশের জিয়ারেত, লিসে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমদিকে পিকেকে একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালালেও, ১৯৯০-এর দশক থেকে তারা তুরস্কের ভেতরে কুর্দি জনগণের জন্য স্বায়ত্তশাসন এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের দাবি করতে শুরু করে।
এমএম