মিয়ানমারের ইয়াংগুনের থিলাওয়া মাল্টিপারপাস ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে জাপানের তিনটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি— কামিগুমি, সুমিতোমো কর্পোরেশন এবং টয়োটা টসো।
প্রকল্পটিতে সামরিক মালিকানাধীন মিয়ানমা ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের (এমইএইচএল) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে মিয়ানমার ও জাপানের নাগরিক সংগঠনগুলোর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানি তিনটি।
এই তিন প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং কর্মীদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে কীভাবে তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান বজায় রাখবে, প্রকল্পের সম্পদ কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবে কিংবা কীভাবে তারা নিশ্চিত করবে যে এর মাধ্যমে মিয়ানমারের জান্তা সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হবে না তা এখনো তারা স্পষ্ট করেনি।
এদিকে, প্রকল্পে জড়িত জাপানি সরকারি সংস্থা ‘জয়েন’ এবং ‘নেক্সি’-এর ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা উঠে এসেছে। নাগরিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, জয়েন প্রকল্পে জাপানি জনগণের অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো স্বচ্ছতা দেখাচ্ছে না, আর নেক্সি পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে সীমিত ব্যাখ্যা দিলেও মানবাধিকার ইস্যু এড়িয়ে যাচ্ছে।
জাপানি এনজিঅ ‘মেকং ওয়াচ’র ইউকা কিগুচি বলেন, জয়েনের নীরবতা এবং নেক্সির ব্যবসায়িক ঝুঁকি নিয়ে সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনার আদর্শ থেকে অনেক দূরে।
‘জাস্টিস ফর মিয়ানমার’ সংগঠনের মুখপাত্র ইয়াদানার মাউং বলেন, ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের পর সেনাবাহিনী বিমান হামলা আরও বাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো অস্বচ্ছ বা দায়িত্বহীন প্রকল্প ছাড় সামরিক অপরাধকে উসকে দিতে পারে। জাপানি কোম্পানি ও সরকারকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে— তারা কীভাবে জান্তা সরকারের অপরাধে অংশীদার হওয়া থেকে নিজেদের দূরে রাখছে।
নাগরিক সংগঠনগুলো দাবি জানিয়েছে, এসব কোম্পানি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান যেন স্বচ্ছ ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল উপায়ে প্রকল্প থেকে সরে আসে এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেন এ থেকে কোনোভাবে আর্থিক সুবিধা না পায়—তা নিশ্চিত করে।
সূত্র: ইরাবতী
এমএম