ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

শীর্ষ গবেষণাগারে ইরানি হামলা, তথ্য গোপনে ব্যস্ত ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৭, জুন ১৫, ২০২৫
শীর্ষ গবেষণাগারে ইরানি হামলা, তথ্য গোপনে ব্যস্ত ইসরায়েল হামলার পর ভিজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স। ছবি সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনার মধ্যে রোববার ভোরে ইসরায়েলের দক্ষিণে তেলআবিবের কাছাকাছি অবস্থিত বিখ্যাত ভিজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে ইরানি একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন ও উন্নত সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি বিশেষভাবে পরিচিত।

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি এই ইনস্টিটিউট, যার গোড়াপত্তন হয়েছিল ১৯৩৪ সালে "ড্যানিয়েল সাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউট" নামে। পরবর্তীতে ইসরায়েলের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং খ্যাতনামা বিজ্ঞানী হাইম ভিজম্যানের নামে ১৯৪৯ সালে এর নামকরণ করা হয় বর্তমান নামে।

বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার গবেষক, শিক্ষার্থী ও কর্মী নিয়ে পরিচালিত এই ইনস্টিটিউটে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে উন্নত মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এখানে রয়েছে ৩০টির বেশি ল্যাবরেটরি, একটি বিশাল গ্রন্থাগার, আবাসিক ভবন এবং লেকচার হল।

তবে শুধু একাডেমিক কাজেই সীমাবদ্ধ নয় ভিজম্যান ইনস্টিটিউটের ভূমিকা। এটি ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত, কারণ এখানে পরিচালিত গবেষণাগুলো সরাসরি দেশটির সেনাবাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে থাকে।

ইনস্টিটিউটটি যে কারণে ইরানের টার্গেটে পরিণত হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে এর সামরিক-সহযোগিতামূলক গবেষণার তালিকায় চোখ রাখলে।  

এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

যুদ্ধক্ষেত্র বিশ্লেষণ ও পরিচালনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।

ড্রোন এবং স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধযান প্রযুক্তি।

উচ্চতর ট্র্যাকিং ও জ্যামিং সিস্টেম।

বিকল্প জিপিএস নেভিগেশন প্রযুক্তি।

সামরিক কোড রক্ষা এবং শত্রু পরিবেশে এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ।

ডিরেক্টেড এনার্জি ও পারমাণবিক গবেষণা।

যুদ্ধে আহত সেনাদের জন্য ক্ষেত্রভিত্তিক চিকিৎসা উদ্ভাবন।

হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে তেমন কোনো ছবি বা তথ্য প্রকাশ হয়নি। সেনাবাহিনীর কড়া সেন্সরশিপের কারণে এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলার খবর নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, আকাশ প্রতিরক্ষায় ঘাটতি নিয়ে দেশটির নিরাপত্তা মহলে কতটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এভাবে ঢুকে পড়ায় ইসরায়েলি অবকাঠামোর দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

ভিজম্যান ইনস্টিটিউট ইসরায়েল সরকারের বিশাল অর্থায়ন ছাড়াও আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠানের অনুদান ও সহায়তা পেয়ে থাকে। এর ফলে বিশ্বের নানা প্রান্তের প্রতিভাবান গবেষকরা এখানে কাজের সুযোগ পান।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।