ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া কেন মাথা নোয়ায় না?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২৭, জুলাই ৬, ২০২৫
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া কেন মাথা নোয়ায় না?

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো যতই নিষেধাজ্ঞার পাহাড় চাপাক, রাশিয়ার যেন কিছুই আসে-যায় না। বিশ্বব্যাপী অনেকের মনেই প্রশ্ন, রহস্যটা কী? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাখ্যায় সেই জবাবের খোঁজ মিলছে।

তার ভাষায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন ‘পেশাদার’। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, তিনি তা এখন ভালোই শিখে গেছেন।

তবে, এখনো হাল ছাড়ছেন না ট্রাম্প। তার মতে, ইউক্রেন সংঘাতের নিষ্পত্তি না হলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে, এটি পুতিনও বোঝেন।

গত শুক্রবার (৪ জুলাই) প্রেসিডেন্টের বিশেষ বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, আগের দিন পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা হয়েছে। পুতিন এতে খুশি নন, তবে নিষেধাজ্ঞা সামলাতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, বলেন ট্রাম্প। অবশ্য নিষেধাজ্ঞাগুলোর কঠোরতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

ট্রাম্প আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার চাপ বাড়তে পারে, এ বিষয়ে পুতিন পুরোপুরি সচেতন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি এই চাপ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেই মনে করছেন ট্রাম্প।

ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপে ইউক্রেন সংঘাত, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই নেতার। উশাকভ বলেন, ট্রাম্প দ্রুত সহিংসতা বন্ধের ওপর জোর দিয়েছেন। মস্কোও রাজনৈতিক সমাধানে উন্মুক্ত, তবে রাশিয়া সংঘাতের মূল কারণগুলো পাশ কাটিয়ে শান্তির নামে কোনো আপস করতে নারাজ।

এদিকে, যেসব দেশ এখনো রাশিয়া থেকে তেল ও জ্বালানি পণ্য আমদানি করে চলেছে, তাদের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। তার প্রস্তাবিত একটি বিলে রাশিয়ান পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। বিলটিতে অন্তত ৮১ জন সিনেটরের সমর্থন রয়েছে। এর পাশাপাশি রাশিয়ার সার্বভৌম ঋণের ওপর নিষেধাজ্ঞাও প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত মাসে গ্রাহাম জানান, ট্রাম্প তাকে বলেছেন, এই বিলটি কংগ্রেসে ভোটের জন্য উপস্থাপনের সময় এসেছে। তখন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, গ্রাহাম দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়াভীতির শিকার। তিনি ক্ষমতায় থাকলে অনেক আগেই নিষেধাজ্ঞা চাপাতেন, কিন্তু তাতে ইউক্রেন সংকট আদৌ মীমাংসিত হতো কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযানের পর তা বহুগুণ বেড়ে যায়। অর্থনৈতিক ও জ্বালানি খাতের পাশাপাশি রাশিয়ার সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি জব্দ করে পশ্চিমা শক্তি। এসব নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ দাবি করে রাশিয়া বলছে, তারা দেশীয় উৎপাদন ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা দিয়ে চাপ সামাল দিচ্ছে।

এমএইচডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।