প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ২৪ ঘণ্টায় বন্ধ করে দেবেন, বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মনে আছে? তিনি বলেছিলেন, তার দুটো ফোনকলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সত্যিই চেষ্টা করেছেন। আলোচনা চালাতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির অসভ্য আচরণ হজম করতে হয়েছে তাকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপেও পরও কাজ হয়নি। এতদিন পর ট্রাম্পের উপলব্ধি কী? ইদানিং তিনি রাশিয়ার সমালোচনায় মুখর। তবে ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কিকেই সংঘাত বন্ধে প্রধান বাধা মনে করছেন ট্রাম্প।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনের ওপর নাখোশ। তার দাবি, রাশিয়ান নেতা সংঘাতের অবসান ঘটাতে চান না। পুতিন নাকি অনেক বাজে কথা বলেন, বলেছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, পুতিন সবসময় খুব ভালো থাকলেও যুদ্ধ বন্ধ করা বেলায় তা অর্থহীন প্রমাণিত হয়েছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা আলোচনায় জড়িত দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, হোয়াইট হাউস আসলে ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, এমন ইঙ্গিত খুব একটা নেই। তবে ইউক্রেনের সমর্থকরা এখনো মনে করছেন, যেকোনো মীমাংসার ক্ষেত্রে পুতিনকে আলোচনার প্রধান অংশীদার হিসেবে দেখবেন ট্রাম্প। আর তিনি জেলেনস্কিকে একটি কার্যকর শান্তি চুক্তির পথে প্রধান বাধা হিসেবে দেখতে চান।
গত জুন মাসে নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি নিবন্ধের দাবি করা হয়েছিল, মার্কিন রাষ্ট্রপতি পুতিন এবং জেলেনস্কি দুজনের ওপরেই বিরক্ত হয়ে আছেন ট্রাম্প। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আলাদা রাগ আছে। ট্রাম্পের চোখে জেলেনস্কি হচ্ছেন সেই দুষ্ট লোক, যে পুরো বিশ্বকে সংঘাতে ঠেলে দিচ্ছে।
গত মে মাসে ট্রাম্প প্রকাশ্যে জেলেনস্কির সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জেলেনস্কি যা বলেন তাই সমস্যা তৈরি করে। গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে দুজনের মধ্যে প্রকাশ্যে ভয়াবহ বাগযুদ্ধ হয়েছিল। সেদিন ট্রাম্প জেলেনস্কিকে অকৃতজ্ঞ বলেছিলেন ট্রাম্প। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলার অভিযোগও তুলেছিলেন।
রাশিয়াকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের ব্যাপারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া এসব বিষয়ে শান্ত থাকছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মেরামতের নীতিতে রাশিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানের পথ তারা খোলা রেখেছে। তবে দেশটি সংঘাতের মূল কারণগুলো মনে রাখবে। নিজেদের নিরাপত্তা উদ্বেগগুলোও মোকাবেলা করবে রাশিয়া। দেশটি ইউক্রেনের নিরপেক্ষ থাকা, আঞ্চলিক বাস্তবতার পাশাপাশি দেশটির নিরস্ত্রীকরণ এবং নাৎসিবাদমুক্ত হওয়ার ওপরেও জোর দিচ্ছে।
এমএম