২০০৬ সালে মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণে ১৮৯ জন নিহত ও ৮০০ জনের বেশি আহত হওয়ার ঘটনার ১৯ বছর পর, আজ (২১ জুলাই) বোম্বে হাইকোর্ট এই ধারাবাহিক বোমা হামলার মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ডিত সকল ১২ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।
২০১৫ সালে এক বিশেষ আদালত এই ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল, যাদের মধ্যে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল কিলোর ও বিচারপতি শ্যাম চাঁদকের বেঞ্চ আজ বলেন, অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযুক্তরা এই অপরাধ করেছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই তাদের দণ্ড বাতিল করা হলো।
আদালত নির্দেশ দেয়, যদি অন্য কোনো মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা না থাকে, তাহলে তাদের মুক্তি দিতে হবে।
আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় অভিযুক্তদের 'সন্দেহের সুবিধা' বা বেনিফিট অব ডাউট দেয়া হয়েছে। আদালত সাক্ষীদের বিবৃতি নিয়েও প্রশ্ন তোলে এবং বলে, বিস্ফোরণের ১০০ দিন পর কেউ একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে মনে রাখতে পারে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আদালত আরও জানায়, তদন্তে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক, অস্ত্র ও মানচিত্রগুলোর সঙ্গে বোমা হামলার কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণও করতে পারেনি ঠিক কী ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল।
২০০৬ সালের ১১ জুলাই মুম্বাইয়ের সাতটি লোকাল ট্রেনে ১১ মিনিটের মধ্যে ধারাবাহিক বোমা হামলা হয়। প্রেশার কুকারে বোমা রাখা হয়েছিল যাতে বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়। প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে, অফিস ফেরা ভিড়ের সময় এবং শেষটি ৬টা ৩৫ মিনিটে। বোমাগুলো চার্চগেট থেকে ছাড়া প্রথম শ্রেণির কামরায় রাখা ছিল এবং বিস্ফোরণগুলো ঘটে মাতুঙ্গা রোড, মাহিম জংশন, বান্দ্রা, খার রোড, জোগেশ্বরী, ভাইয়ান্দার ও বোরিভালি স্টেশনের কাছে।
২০১৫ সালে একটি বিশেষ আদালত ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। মহারাষ্ট্র সংঘটিত অপরাধ দমন আইনের (এমসিওসিএ) বিশেষ আদালত ফয়সল শেখ, আসিফ খান, কামাল আনসারি, এহতেশাম সিদ্দিকি ও নবীদ খানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। অপর ৭ জন- মোহাম্মদ সাজিদ আনসারি, মোহাম্মদ আলী, ড. তানভীর আনসারি, মজিদ শফি, মুজাম্মিল শেখ, সুহেল শেখ ও জামির শেখকে চক্রান্তে অংশগ্রহণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান।
সূত্র: এনডি টিভি
এমএম