টানা মানবিক অবরোধ ও হামলার মধ্যে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন গাজার অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মানুষ। জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে এখন ৯০ হাজার শিশু ও নারী মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছেন, যাদের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন।
সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার বহু মানুষ টানা ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। শিশুদের একটি বড় অংশ পুষ্টিহীনতা ও রোগে ভুগছে, যা দ্রুত সমাধান না হলে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে।
এই সপ্তাহেই গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২৬ জুলাই) অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে এ পর্যন্ত অপুষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২২ জনে।
অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশে তারা কোনো প্রকার বাধা দিচ্ছে না। তারা এই পরিস্থিতির জন্য হামাসকে দায়ী করছে।
তবে ইসরায়েলি অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো। শুক্রবার জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়।
তারা বলেছে, মানবিক বিপর্যয় অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে বেসামরিকদের জন্য জরুরি সহায়তা আটকে রাখা অগ্রহণযোগ্য।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে যথেষ্ট উদাসীনতা ও সহানুভূতির অভাব রয়েছে। তিনি আরও জানান, খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ফিলিস্তিনি।
গুতেরেস এই মন্তব্য করেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও গ্লোবাল অ্যাসেম্বলিতে দেওয়া এক বক্তব্যে।
এছাড়া মে মাস থেকে বিতর্কিত একটি ত্রাণ সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এর মাধ্যমে গাজায় খাদ্য সহায়তা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। সংস্থাটিতে কর্মরত এক মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, গাজায় আমি যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হতে দেখেছি।
সূত্র: বিবিসি
এমজে