ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৬ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে: ডিসিসিআই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৫১, জুলাই ৩১, ২০২৫
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে: ডিসিসিআই

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

বৃহস্পতিবার (৩১জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমিয়ে ৭.২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে মুদ্রানীতি প্রণনয়ন করার পর ডিসিসিআই এ প্রতিক্রিয়া জানাল।

সংগঠনটি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখায় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগের পাশাপাশি সার্বিক শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

২০২৫ সালের জুন মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে মাত্র ৬.৪ শতাংশে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডিসিসিআই মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশের অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার অস্থিতিশীলতা, সীমিত জ্বালানি সরবরাহ এবং সর্বোপরি কঠোর মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির এই নিম্নগতি আরও তীব্র হচ্ছে।

খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৩ লাখ কোটি টাকা, যা মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ, এটি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করছে, সেই সাথে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

ব্যবসায়িক আস্থার এই নিম্নমুখিতা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নীতিসুদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

ডিসিসিআই’র মতে, এই দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ সুদের হার বিশেষ করে ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং উৎপাদনশীল খাতের ওপর অতিরিক্ত ঋণের ভার চাপিয়ে দিচ্ছে, যা অর্থনৈতিক গতিশীলতা ব্যাহত করছে। নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী ছয় মাসের জন্য বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মাত্র ৭.২ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী নীতিতে ছিল ৯.৮ শতাংশ। এর বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০.৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যা অর্থনীতিতে আর্থিক চাপ বৃদ্ধি করবে, সেই সাথে করদাতাদের ওপর বোঝা বাড়বে, পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ আরও সংকুচিত করবে।

ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে সুদের হার হ্রাস এবং ঋণের শর্তাবলি সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। একই সাথে সৎ ঋণগ্রহীতাদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা এবং তাক্ষণিক খেলাপির ঝুঁকি এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসের সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে ডিসিসিআই আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং তারল্য নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারির ওপর জোরারোপ করছে।

ডিসিসিআই’র মতে, ভবিষ্যতে বিশেষ করে বেসরকরি খাতের আস্থা পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আরও নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাত ভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির কোনো বিকল্প নেই।

জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।