ঢাকা, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

সিডনির হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিপন্থীদের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৩, আগস্ট ৩, ২০২৫
সিডনির হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিপন্থীদের বিক্ষোভ

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিনপন্থীদের একটি পরিকল্পিত বিক্ষোভ মিছিল শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। একদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট এই মিছিলের অনুমতি দেয়।

 

রোববার ভারী বৃষ্টির মধ্যেও হাজার হাজার মানুষ ‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’ কর্মসূচিতে অংশ নেন। অনেকেই রাজনীতিকদের উদ্দেশে যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে নানা বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে বিক্ষোভে দেখা যায়। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ফেডারেল সংসদ সদস্য অ্যাড হুসিক এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের সাবেক প্রিমিয়ার বব কার।

সিডনি হারবার ব্রিজ সর্বশেষ ২০২৩ সালে কোনো জনসমাবেশের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল। তখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ‘ওয়ার্ল্ড প্রাইড’ উপলক্ষে সেখানে মিছিল করেছিলেন।

মিছিলে স্লোগান ছিল ‘শেম শেম ইসরায়েল, শেম শেম ইউএসএ’।  তারা আরও স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘আমরা কী চাই? যুদ্ধবিরতি! কখন চাই? এখনই!’

অনেক পরিবার ছোট ছোট শিশুদের নিয়েও শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ব্রিজজুড়ে তাদের পাশে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন ছিল দাঙ্গা দমন বাহিনীর সদস্যরাও।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাবা অ্যালেক বেভিল বলেন, আমি জানি এটা পৃথিবীর অন্য প্রান্তের ঘটনা, কিন্তু এটা আমাদেরও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। গাজার শিশুদের আমি আমার তিন বছরের ছেলে ফ্র্যাঙ্কির সঙ্গে তুলনা করি। আমরা চাইলে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারি।  

অন্যদিকে, শিশু সন্তানকে নিয়ে অংশ নেওয়া জারা উইলিয়ামস বলেন, আমাদের সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। আমরা (অস্ট্রেলিয়া) কিছু না করে থাকতে পারি না, যখন একটি পুরো জনগণকে জোরপূর্বক অনাহারে রাখা হচ্ছে।

মিছিল শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা পর নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মোবাইলে একটি বার্তা পাঠায়— আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে, জননিরাপত্তার স্বার্থে মিছিল থামাতে হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।  

বার্তায় বলা হয়, ব্রিজে থাকা সবাই যেন উত্তরের দিকে যাত্রা না করে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে শহরের দিকে ফিরে যায়। পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা জানায়নি।

একটি হেলিকপ্টার থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ সিডনি হারবার ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে বা হাঁটছেন।

নিউ সাউথ ওয়েলস ট্রান্সপোর্ট বিভাগ চালকদের শহরে না যাওয়ার অনুরোধ জানায়, কারণ বিক্ষোভের কারণে সিডনির রাস্তাগুলো এবং গণপরিবহন নেটওয়ার্কে বড় ধরনের বিলম্ব ও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

সিডনিভিত্তিক অ্যাক্টিভিস্ট সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপ গত রোববার এই মিছিলের জন্য একটি নোটিশ দেয়। তাদের দাবি ছিল, গাজার নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই পদযাত্রা।

তবে পুলিশ এই আবেদন নাকচ করে দেয়, কারণ তারা বলেছিল, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য যথেষ্ট সময় নেই এবং অতিরিক্ত ভিড় ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি রয়েছে।

পরদিন নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস এক বিবৃতিতে বলেন, সিডনিকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে দেওয়া যাবে না এবং এমন কোনো বিক্ষোভ ব্রিজে অনুষ্ঠিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।

পুলিশ পরে বিক্ষোভ ঠেকাতে নিউ সাউথ ওয়েলস সুপ্রিম কোর্টে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। তবে বিক্ষোভ শুরুর মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে সেই আবেদন নাকচ করে দেন বিচারপতি বেলিন্ডা রিগ।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।