আধমরা ইউক্রেনকে টিকিয়ে রাখতে ট্রাম্প যখন হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিনকে থামাতে চান, তখন রুশ প্রেসিডেন্ট যেন কেবল এক মুচকি হাসি দেন। বিষয়টি নিছক উদাসীনতা নয়, বরং আত্মবিশ্বাস।
রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে নিজেদের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সফল হয়েছে। সামরিক বাহিনীতেও নতুন অনেক সৈন্য যোগ দিয়েছে। বিপরীতে ইউক্রেন ভয়াবহ জনবল সংকটে পড়েছে।
যত প্রযুক্তি বা অস্ত্রই থাকুক, যুদ্ধক্ষেত্রে জয় পেতে দরকার পর্যাপ্ত সৈন্য। অথচ ইউক্রেনের রিজার্ভ সেনা ক্রমেই কমছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় পুরুষদের বিশেষ অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়ার সুযোগ নেই। বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগেও অনেকে যোগ দিতে অনাগ্রহী।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। রাশিয়ার সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ইউক্রেনের চেয়ে ৪ লাখ ২০ হাজার বেশি। রিজার্ভ ও আধাসামরিক বাহিনী ধরা হয়নি। রাশিয়ার বেশিরভাগ সেনাই নিজ দেশের নাগরিক, বিদেশি ভাড়াটে নয়।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বাহিনীতে সহিংস নৈরাজ্যবাদী, বিদেশি যোদ্ধা, চরমপন্থী, বেসরকারি সামরিক ঠিকাদার, ভাড়াটে, স্বেচ্ছাসেবকসহ নানা গোষ্ঠীর এক বিশৃঙ্খল মিশ্রণ দেখা গেছে। তাদের অনেকেই নিহত বা বন্দি হয়েছেন, ফলে ইউক্রেনের যোদ্ধার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
এখন রাশিয়া নতুন করে বিদেশি সৈন্য নিয়োগ করছে এবং তাদের যথেষ্ট আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে। মধ্য এশিয়া, সিরিয়া, কিউবা, ভারত, নেপাল থেকে অনেকেই রাশিয়ার পক্ষে যোগ দিচ্ছেন। রটার্সের খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন আক্রমণে প্রায় ১০ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে—যা বিশ্বজুড়ে দৃষ্টি কেড়েছে।
এছাড়া রাশিয়া চুক্তিভিত্তিক সৈন্যদের ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। তবে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো প্রচার করছে, রাশিয়া ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরও সেনাবাহিনীতে নিচ্ছে এবং শারীরিক মানদণ্ডে ছাড় দিচ্ছে। পাশাপাশি, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ফলে রাশিয়ার অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কার কথাও বলছে তারা।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অর্থনীতি বর্তমানে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৪ সালে রুশ অর্থনীতি ৪.৩ শতাংশ হারে বেড়েছে, যেখানে যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি ১.১ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ২.৮ শতাংশ।
এই বাস্তবতায় রাশিয়ার শক্তিশালী হয়ে ওঠা ঠেকাবে কে? আর পুতিন কেনই বা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায় উঠবস করবেন?
এমএইচডি