গ্রেমাউথ: নিউজিল্যান্ডের কয়লাখনিতে নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধারের আশা ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের পুলিশ। খনিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণের ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারের পর মঙ্গলবার এ তথ্য জানা যায়।
ভিডিওটি প্রকাশ করার আগেই তা দেখেন শ্রমিক পরিবারের হতাশ সদস্যরা। একইসঙ্গে উদ্ধারকাজে কোনো অগ্রগতি না হওয়া, খনিতে পাঠানো রোবট ভেঙ্গে যাওয়া এবং গর্ত খোড়ার কাজে ধীরগতির জন্য ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানান তারা।
কিন্তু আরও উচ্চ মাত্রার বিস্ফোরণের সম্ভবনা এবং বিষাক্ত গ্যাসের কারণে খনিতে উদ্ধার দল পাঠানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান দেশটির পুলিশ কমিশনার হাওয়ার্ড ব্রোড।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘পরিস্থিতি যদি এমনই থাকে তাহলে খনিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারের আশা ক্রমেই ীণ থেকে ীণ হবে। ’
উদ্ধারকর্মীরাও সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন বলে উদ্ধার তৎপরতার সমন্বয়কারী পুলিশের সুপারিন্টেডেন্ট গ্যারি নোলস জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোনো পরিস্থিতির উপযোগী পরিকল্পনাই করছি। আর এরমধ্যে ভূগর্ভে আটকে পড়া ব্যক্তিদের কারও আর জীবিত না থাকার বিষয়টির জন্যও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’
নিউজিল্যান্ডের দেিণর প্রত্যন্ত দ্বীপের কয়লা খনিতে গত শুক্রবার বিস্ফোরণ হয়। এরপর থেকে সেখানে আটকে পড়া ২৯ জন শ্রমিকের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
৫২ সেকেন্ডের বিস্ফোরণে দুই দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরের খনির প্রবেশ মুখ পর্যন্ত পাথরের ধুলা উড়তে থাকে বলে পাইক রিভার কয়লা কোম্পানির প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে বিস্ফোরণের জায়গায়তেই নিখোঁজ খনি শ্রমিকদের অবস্থান জানা যায়।
তবে শক্তিশালী বিস্ফোরণের কারণে আটকে পড়া শ্রমিকদের বেঁচে থাকার সম্ভবনা নেই, এ ধারণা অযৌক্তিক বলে পাইক রিভারের প্রধান নির্বাহী পিটার হুইটাল জানান।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পরও দু’জন সেখান থেকে ফিরে এসেছেন, তাই এটা সত্যি বলে আমি মনে করিনা। ’
তবে গ্যাসের নমুনা সংগ্রহের জন্য শুরু করা খনন কাজ মাটির ১৪২ মিটার গভীরে কঠিন পাথরের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বলেও হুইটাল জানান। তাই মাটির আরও ২০ মিটার গভীরে পৌঁছে কাজ শেষ করতে মঙ্গলবার সারাদিন লাগবে বলে
জানান তিনি।
১৫ সেন্টিমিটারের এ গর্তের সাহায্যে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করাসহ লেজার বিশিষ্ট যন্ত্র ও ভিডিও ক্যামেরা পাঠানো হবে বলেও জানা যায়।
তবে প্রথমে পাঠানো ক্যামেরায় জীবনের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি বলেও হুইটাল জানান ।
এদিকে খনির ভেতর জীবিত শ্রমিকের সন্ধানে এর প্রবেশ মুখে সিসমিক যন্ত্র বসানো হয়েছে বলে নোলস জানান।
জীবনের কোনো চিহ্ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকর্মীদের খনিতে পাঠানো হবে বলে নিউজিল্যান্ডের খনি উদ্ধারের সাধারণ ব্যবস্থাপক ট্রেভর ওয়াটস জানান।
এদিকে খনিতে দ্বিতীয় রোবট পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে প্রতিরামন্ত্রী ওয়েন ম্যাপ জানান। তবে রোবটিকে আগে ভেজা ভূগর্ভস্থ স্থানে কাজ করার উপযোগী করতে হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘন্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০